নয়াদিল্লি: হোয়াটস্যাপের মাধ্যমে কোনও বিচার প্রক্রিয়া চলার কথা শুনেছেন কখনও? আজব হলেও এমনটা সত্যই ঘটেছে। এই অদ্ভূত ঘটনাটি সুপ্রিম কোর্টেও এসে পৌঁছয়। এ রকম ঘটনার কথা শুনে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, ‘এটা কি তামাশা হচ্ছে?’
এই মামলার সঙ্গে জড়িত ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিধায়ক স্ত্রী। হাজারিবাগের নিম্ন আদালতের বিচারক ‘হোয়াটস্যাপে’ কলের মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দিয়ে তাঁদের বিচার শুরু কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
২০১৬-র একটি হিংসার মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী যোগেন্দ্র সাও ও তাঁর স্ত্রী নির্মলা দেবী গত বছরই সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়েছিলেন। তবে শর্ত ছিল, আদালতে শুনানির প্রক্রিয়া অংশ নেওয়া বাদে তাঁদের ভোপালেই থাকতে হবে। ঝাড়খণ্ডে ঢোকা যাবে না।
দুই অভিযুক্তই গত সুপ্রিম কোর্টকে জানান যে, গত ১৯ জুলাই হোয়াটস্যাপ কলে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের কথা জানান বিচারক। এভাবে চার্জ গঠনের কথা জানানোর বিরোধিতা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই আপত্তি গ্রাহ্য হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।
এই ঘটনায় কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছে বিচারপতি এস এ বোবদে এবং বিচারপতি এলএন রাওকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ। বেঞ্চ বলেছে, ‘ঝাড়খণ্ডে হচ্ছেটা কী। এই প্রক্রিয়া কোনওভাবেই অনুমোদনযোগ্য নয়। এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করতে পারি না’।
ঝাড়খণ্ডের কৌঁসুলি আদালতকে বলেন, সাও জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করেছেন এবং মামলার প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে তিনি বেশিরভাগ সময় ভোপালের বাইরেই ছিলেন।
এর জবাবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওটা আলাদা ব্যাপার। জামিনের শর্ত ভঙ্গ নিয়ে অভিযোগ থাকলে জামিন বাতিলের পৃথক আর্জি জানানো যেত।
দুই অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, হাজারিবাগের জেলা আদালত থেকে ভোপালের জেলা আদালতে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে এই মামলার শুনানি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা বেশিরভাগ সময়েই ভাল ভাবে কাজ করেনি। ফলে ১৯ এপ্রিল হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে সাও-নির্মলাকে চার্জগঠনের কথা জানানো হয়।
আদালত জানতে চায়, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কতগুলি মামলা বকেয়া রয়েছে। অভিযুক্তদের আইনজীবী বলেন, সাওয়ের বিরুদ্ধে ২১ এবং নির্মলার বিরুদ্ধে ৯ টি মামলা বকেয়া রয়েছে। তিনি বলেছেন, অভিযুক্তরা রাজনীতিক। তাঁরা এনটিপিসি-র জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। বেশিরভাগ মামলাই এই আন্দোলন সংক্রান্ত। তিনি বলেন, দিল্লিতে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে মামলার জন্য তৈরি বিশেষ আদালত রয়েছে। সাও-নির্মলার বিরুদ্ধে মামলাগুলিকে সেই আদালতে সরিয়ে আনতে আর্জি জানান তিনি।