বেঙ্গালুরু:  অবশেষে খোঁজ মিলল ল্যান্ডার বিক্রমের। অর্বিটারের ক্যামেরার থার্মাল ইমেজের মাধ্যমে দেখা গেল বিক্রমকে। ইসরো সূত্রে খবর, ছবি অনুযায়ী, বিক্রম অক্ষত রয়েছে। তবে, বিক্রম থেকে কোনও বেতার সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে না। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান কে শিবন জানিয়েছেন, যোগাযোগের সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাঁর আশা, শীঘ্রই যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে।
এদিনের খবরে নতুন আশার দিশা দেখছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। নতুন আশা দেখছে তামাম ভারতবাসী। কারণ, শুক্রবার রাতে অবতরণের ঠিক আগে, যেভাবে ল্যান্ডার বিক্রম নিখোঁজ হয়ে যায়, তখন বিজ্ঞানীমহল থেকে শুরু করে দেশবাসী-- সকলে বিভিন্ন ধরনের আশঙ্কা শুরু করেন। কিন্তু, এদিন দুপুরে আবহাওয়া আচমকা পাল্টে যায়। জানা যায় যে, চন্দ্রপৃষ্ঠে ল্যান্ডারের ছবি মিলেছে। থার্মাল ইমেজে বিক্রমের সেই ছবি দেখতে পেয়েছে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করা অর্বিটার।





ইসরো সূত্রে খবর, ছবিতে দেখে মনে হয়েছে বিক্রম অক্ষত রয়েছে। কিন্তু, শুক্রবার রাতে তার সফট ল্যান্ডিং হয়েছে না কি হার্ড ল্যান্ডিং-- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিবন জানিয়েছেন, দেখা মিললেও এখনও কোনও যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। সেই চেষ্টা চলছে। এখন বিজ্ঞানীদের আশা, কোনওভাবে যদি যোগাযোগ স্থাপন করে রোভার প্রজ্ঞানের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়।
শুক্রবার রাত ১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করার কথা ছিল চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রমের। বেঙ্গালুরুর বায়ালুতে ইসরো টেলিমেট্রি অ্যান্ড ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক (ইসট্র্যাক) কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন বিজ্ঞানীরা। সব ঠিকঠাক চলার মধ্যেই ঘটে ছন্দপতন। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে চন্দ্রযান ২-এর দূরত্ব যখন মাত্র ২.১ কিলোমিটার, তখনই ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিক্রমের। আচমকাই ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় ল্যান্ডার।
ইসরোর চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ইসরোর যোগাযোগ। তবে, সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। আগামী ১৪-দিন সেই প্রচেষ্টা চলবে। তারপর কেটে গিয়েছে উদ্বেগের ৫০-ঘণ্টা। উৎকণ্ঠায় ছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। প্রধানমন্ত্রীর সামনে হাউ-হাউ করে কাঁদতে দেখা গিয়েছে ইসরো প্রধান কে শিবনকে। দেখা গিয়েছে, কীভাবে মোদি তাঁকে জড়িয়ে ধরে পিঠ চাপড়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
এর আগে, গত ২২ জুলাই, অর্বিটার, ল্যান্ডার(বিক্রম) ও রোভার(প্রজ্ঞান) নিয়ে জিএসএলভি মার্ক-৩ এম ১ রকেটে চড়ে পৃথিবীর মাটি ছেড়ে চাঁদের দিকে উড়ে যায় ৩,৮৪০ কেজির চন্দ্রযান ২। উৎক্ষেপণের ২৩ দিনের মাথায় ১৪ অগাস্ট তা পৃথিবীর কক্ষপথ ত্যাগ করে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে। এরপর, ২ সেপ্টেম্বর অর্বিটারের থেকে সফলভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেটে রোভারকে নিয়ে চাঁদের দিকে আরও এগিয়ে যায় ল্যান্ডার। শুক্রবার রাতে সেই আশা ধাক্কা খায়।