শ্রীনগর: গতকাল মধ্যরাত্রি থেকে রাজ্যের মর্যাদা হারাল জম্মু কাশ্মীর। ভাগ হয়ে গেল দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে, জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখ। আইএএস অফিসার গিরিশচন্দ্র মুর্মূ জম্মু কাশ্মীরের প্রথম লেফটেন্যান্ট গভর্নর হয়েছেন, আর কে মাথুর হয়েছেন লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর। শ্রীনগর ও লে-তে দুটিআলাদা অনুষ্ঠানে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করানো হবে। পাঠ করাবেন জম্মু কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল।


জম্মু কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন অনুযায়ী রাজ্য ভেঙে দুটি নতুন কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল গঠনের তারিখ ছিল ৩১ অক্টোবর। অর্থাৎ রাজ্যসভায় ব্যাপারে ঘোষণার প্রায় ৩ মাস পর সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হল। এই প্রথম কোনও পূর্ণাঙ্গ রাজ্যকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাঙা হল যদিও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার একাধিক উদাহরণ রয়েছে। এর ফলে দেশে রাজ্যের সংখ্যা কমে দাঁড়াল ২৮, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সংখ্যা বেড়ে হল ৭। শেষ হয়ে গেল জম্মু কাশ্মীরের আলাদা সংবিধানের অস্তিত্বও। তাৎপর্যপূর্ণভাবে আজই দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মদিন, যিনি ৫৬০-এরও বেশি করদ রাজ্যকে ভারতভুক্ত করিয়েছিলেন। আজকের দিনটি পালিত হচ্ছে জাতীয় ঐক্য দিবস হিসেবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ ব্যাপারে গুজরাতের কেভাদিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অনুষ্ঠান রয়েছে দিল্লিতে।

৫ অগাস্ট, অর্থাৎ দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পর ৯০ দিনের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকার জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ ক্ষমতা বিলুপ্ত করার জন্য সংবিধানের ৩৭০ ধারা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি রাজ্য ভেঙে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল তৈরি করে তারা। ২৬ অক্টোবর, ১৯৪৭ কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা হরি সিংহ ভারতভুক্তি আইনে সই করার ৭২ বছর পর নাছোড় জঙ্গি সমস্যা মেটাতে নেওয়া হয় এই সিদ্ধান্ত।

নতুন আইন অনুযায়ী জম্মু কাশ্মীরে এখন থেকে পন্ডিচেরির মত আইনসভা বলবৎ হবে, লাদাখে আইনসভা থাকবে না, তা চলবে চণ্ডীগড়ের ধাঁচে। দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলেরই নেতৃত্ব দেবেন দুই লেফটেন্যান্ট গভর্নর। পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা থাকবে কেন্দ্রের অধীনে। তবে নির্বাচনের পর জম্মু কাশ্মীরের দায়িত্ব নেবে নির্বাচিত সরকার। তবে লাদাখের সম্পূর্ণ দায়িত্বই বরাবর কেন্দ্রের হাতে থাকবে। রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এলে ঠিক সময়ে জম্মু কাশ্মীরে নির্বাচন হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।