জামসেদপুর: মাত্র ১২টি আম, কার্যত সোনার দরে বিক্রি করল কিশোরী। জানা গিয়েছে, ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে জামশেদপুরের তুলসি কুমারী। অর্থাৎ হিসেব বলছে প্রতিটি আম ১০ হাজার টাকা। মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ী সেই আম কিনেছেন। সত্যিই অবাক হওয়ার মতো ঘটনা। 


সূত্রের খবর, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তুলসি। সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে সে। লকডাউন পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস করার জন্য একটা স্মার্টফোনের খুব প্রয়োজন ছিল তার। তবে তুলসিকে প্রয়োজনীয় স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না দরিদ্র পরিবারের। এরপর কার্যত মিরাকেল হল। কোথা থেকে যেন দেবদূতের মতো এসে হাজির হলেন এক ব্যবসায়ী। লক্ষাধিক টাকা দিয়ে কিনে নিলেন ১২টি আম।


ঠিক কী ঘটেছিল? সম্প্রতি  রাস্তার ধারে আম বিক্রি করছিল তুলসি। সে সময় আমেয়া হেত নামে এক ব্যবসায়ী তুলসির কাছ থেকে ওই আম কেনেন। তবে সামান্য টাকায় নয়। ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে। 


কেন এতটা দাম দিলেন আমেয়া? আমেয়া জানিয়েছেন, স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যম থেকে তুলসি কুমারীর কথা জানতে পেরেছিলেন তিনি। আর্থিক অনটনের জন্য তুলসির পড়াশোনা বন্ধ হতে চলেছিল এ কথা জানতে পেরেই ওই ব্যবসায়ী সিদ্ধান্ত নেন কিশোরী তুলসিকে পড়াশোনায় সহযোগিতা করবেন।


যেমন ভাবা তেমন কাজ। তুলসির গ্রামে পৌঁছে যান ব্যবসায়ী। খুঁজেও পেয়ে যান তুলসিকে। আমের দাম হিসেবে শুধু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকাই নয়, ১ বছরের ইন্টারনেটের রিচার্জ-সহ তুলসিকে ১৩ হাজার টাকা দামের একটি স্মার্টফোনও কিনে দেন আমেয়া।


এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী আমেয়া আরও জানান, পড়ার জন্য তুলসির যে উৎসাহ তিনি দেখেছিলেন, সেটাই তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। তাই তুলসির সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।


অন্যদিকে তুলসি জানিয়েছে, সে আম বিক্রি করে একটু একটু করে টাকা জমাচ্ছিল স্মার্টফোন কেনার জন্য, যাতে অনলাইন ক্লাস করতে পারে। তবে আমেয়ার থেকে পাওয়ায় স্মার্টফোন দিয়ে অনলাই ক্লাস করতে পারবে সে। আর পাওয়া টাকা দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে ভেবেই খুশি ছোট্ট মেয়েটি। পরিবারের মুখেও হাসি ফুটেছে। গত বুধবারই তুলসির বাবার ব্য়াঙ্ক অ্য়কাউন্টে সেই টাকা পৌঁছে দিয়েছেন ব্যবসায়ী।