ওয়াশিংটন: ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতি, শেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ দ্বন্দ্বে দেশজোড়া বিভাজন এবং অর্থনীতির বেহাল দশা- এই তিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে আমেরিকা প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিল ৭৮ বছরের জো বাইডেনকে।


যিনি এখন পর্যন্ত আমেরিকার ইতিহাসে সব থেকে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। ওয়াশিংটনের রাজনীতির অলিন্দে যিনি মিডল ক্লাস জো হিসেবে পরিচিত।


কঠিন এই সময়ে ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবর্তে ওই মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি, মৃদুভাষী বাইডেনের ওপরই আস্থা রাখলেন মার্কিন ভোটাররা।


তিন বারের মাথায় আমেরিকার প্রেসডেন্ট নির্বাচিত হলেন বাইডেন। এর আগে ১৯৮৮ এবং ২০০৮-এ তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। দু’বারই শেষরক্ষা হয়নি।


বারাক ওবামার আমলে ২০০৮ এবং ২০১২- দু’বারই তিনি ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকার ইতিহাসে রেকর্ড ভোট পেয়েছেন বাইডেন। পেয়েছেন ৭ কোটি ৪৪ লক্ষের বেশি ভোট।


১৯৭২ এ প্রথমবার ডেলাওয়্যার থেকে সেনেটর নির্বাচিত হন বাইডেন। কিন্তু তারপরই ব্যক্তিগত জীবনে ভয়াবহ ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হন।


গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর প্রথম স্ত্রী নেইলিরা ও এবং শিশুকন্যা নাওমির মৃত্যু হয়। ২০১৫-তে ছেলে বো বাইডেনের মৃত্যু হয় ক্যান্সারে।


অনেকে বলে থাকেন, ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডির জন্যই ওবামা হেলথ কেয়ার চালু করার জন্য লড়াই চালিয়েছিলেন বাইডেন। স্ত্রী ও শিশুকন্যার মৃত্যুর পর এক সময় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী জিল তাঁকে জীবনবিমুখ হতে দেননি।


ভাগ্যিস দেননি। তাই তো করোনা সংক্রমণে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা আমেরিকা মিডল ক্লাস জো-কেই বেছে নিল।


প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়ে জানিয়েও দিয়েছেন, করোনা মোকাবিলা এবং দেশের অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফেরানোই তাঁর প্রধান কাজ।


মহিলা, আফ্রিকান-আমেরিকান, তরুণ প্রজন্ম, কৃষ্ণাঙ্গ এমনকী শেতাঙ্গদেরও একটা বড় অংশের সমর্থন পেয়েছেন তিনি।


আর তাত্‍পর্যপূর্ণ হল, পেনসিলভেনিয়ায় ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর বাইডেন পরিবারের ছেলে জো-র জন্ম হয়েছিল। তৃতীয় বারের চেষ্টায় ৭৮ বছরের জো-র স্বপ্ন পূরণ করল সেই পেনসিলভেনিয়াই।


আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন জোসেফ রবিনেট বাইডেন।