কলকাতা: উত্তরাখণ্ডে চারধাম যাত্রার প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত হরিদ্বার বাঙালির অতি পরিচিত জায়গা। মূলত মহাদেবের ধাম হিসেবে পরিচিত উত্তরাখণ্ড। তবে অন্যান্য দেবদেবীদেরও মন্দির আছে উত্তর ভারতের এই রাজ্যে। হরিদ্বারেই যেমন রয়েছে দক্ষিণ কালী মন্দির। এটি দেশের অন্যতম সিদ্ধপীঠ। মন্দিরের পুরোহিত, সেবায়েত ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, এই ধরনের দক্ষিণ কালী মন্দির সারা ভারতে মাত্র দু’টি আছে। তার মধ্যে একটি হল দক্ষিণেশ্বর এবং দ্বিতীয়টি হরিদ্বারে। দক্ষিণেশ্বরের সঙ্গে হরিদ্বারের এই মন্দিরের ঘনিষ্ঠ যোগও আছে। রামকৃষ্ণদেবের এক শিষ্য এই মন্দির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
হরিদ্বারে চণ্ডীঘাটের কাছেই অবস্থিত দক্ষিণ কালী মন্দির। এখানে গঙ্গা বইছে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে। কিন্তু দেবী কালীর মূর্তি পূর্বদিকে মুখ করে আছে। মন্দিরে প্রবেশ করলে প্রথমে কালীমূর্তি চোখে পড়ে। এরপর সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলে চোখে পড়ে দশমহাবিদ্যার মূর্তিগুলি। গুহার মধ্যে অগ্নিকুণ্ডের সামনে রয়েছে এই মূর্তিগুলি। গুহায় প্রবেশ করলে অজান্তেই ভক্তি ও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায়। আলো-আঁধারের পরিবেশে মন একেবারে অন্যরকম হয়ে যায়।
সেবায়েতরা জানালেন, মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে হরিদ্বারের এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন গুরু কামরাজ। তাঁর আহ্বানে গঙ্গার তীরবর্তী এই মন্দিরে গিয়ে বসবাস শুরু করেন অলহা ও তাঁর স্ত্রী মছলা। স্থানীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী, এই মন্দিরে বাস করেন সাদা-কালো রঙের নাগ-নাগিন। এছাড়া ড্রাগনও বাস করে এই মন্দিরে। তবে কেউ তাদের দেখতে পান না। জোড়া সাপ ও ড্রাগন কোনওদিন কারও ক্ষতিও করেনি।
হরিদ্বারের এই সিদ্ধপীঠে রোজ কয়েকশো ভক্ত পুজো দিতে যান। প্রতি শনিবার বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। নবরাত্রিতেও বিশেষ পুজো হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করলে সব মনোকামনা পূর্ণ হয়। এছাড়া রোগ-যন্ত্রণা, অন্যান্য সমস্যাও দূর হয়।
এই সিদ্ধপীঠে দেবীর উদ্দেশে অর্পণ করা হয় নারকেল, গোলাপ ফুল, কালোজাম, মিষ্টি পান। শনিবার মা কালীকে দেওয়া হয় খিচুড়ি।