শ্রীনগর: জম্মুর পর এবার কাশ্মীরে গৃহবন্দি রাজনৈতিক নেতাদেরও একে একে ছেড়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকার গত ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে। একাধিক বিধিনিষেধ জারি করে তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ গোটা রাজ্যের বহু রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দি করে প্রশাসন। গতকাল জম্মুর নেতাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের এক উপদেষ্টা কাশ্মীরের নেতাদেরও বন্দিদশা থেকে ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরে পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার দ্বিতীয় স্তর ব্লক ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (বিডিসি) নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণার পরই ধৃত রাজনৈতিক নেতাদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। জম্মুর পর কাশ্মীরের গৃহবন্দি রাজনীতিকদের মুক্তির সম্ভাবনার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যপালের উপদেষ্টা ফারুক খান বলেন, হ্যাঁ, প্রত্যেককে আলাদা করে খতিয়ে দেখে, বিশ্লেষণ করে পরপর ছাড়া হবে।
৮৩ বছরের ফারুক আবদুল্লা, তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি-এই তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রায় ৪০০ রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দি করা হয়। পাশাপাশি রাজ্যে কঠোর নিরাপত্তা সংক্রান্ত পদক্ষেপও করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে ল্যান্ডলাইন ও মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পাল্টা হিংসাত্মক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায়। এ নিয়ে আমেরিকা, রাষ্ট্রপুঞ্জ সহ আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বেগ জানিয়েছে।
যদিও কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের ব্যাপারে স্থানীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। গত কয়েক সপ্তাহে কাশ্মীরে জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে এগিয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুতে কেন্দ্র ২৪ অক্টোবর রাজ্যে ৩০০ বিডিসি-তে নির্বাচন ও সেদিনই ভোটগণনার নির্ঘন্ট জানিয়েছে। প্রায় ২৬০০০ পঞ্চায়েত সদস্য ভোট দেবেন।
একটি সূত্রের খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে ২৭৮০টি শূন্য পদ পূরণে রিক্রুটমেন্ট সমাবেশের আয়োজন করছে। আজকের পর আগামীকালও জম্মু ও কাশ্মীরে আর্মি রিক্রুটমেন্ট অফিস ও সেনার রেজিমেন্টাল সেন্টারে ওই সমাবেশের আয়োজন করে প্রার্থী বাছাইয়ের কথা রয়েছে। জনৈক অফিসার বলেছেন, রেজিমেন্টাল সেন্টারে ইউনিট হেডকোয়ার্টার্স কোটা রিক্রুটমেন্ট সমাবেশ হবে। প্রাক্তন ও বর্তমান সেনাকর্মীদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক থাকা প্রার্থীরা সমাবেশে যোগদানের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
গত সপ্তাহে লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজেএস ধিঁলো জানিয়েছিলেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই কাশ্মীরে সেনার রিক্রুটমেন্ট অভিযান হবে। তার আগে ১৫ দিনের ট্রেনিংও দেওয়া হবে যাতে আগ্রহী প্রার্থীরা যোগদান করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে বাছাই হতে পারে।