কলকাতা: করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে সমস্যায় মানুষ। বিদেশে থাকা যে ভারতীয়রা দেশে ফিরতে পারছেন না, তাঁরাও বিপাকে পড়েছেন। তাঁদেরই একজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার বাসিন্দা চয়ন নাথ। তিনি ডাক্তারি পড়তে ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় গিয়ে এখন ঘরবন্দি। এ মাসের ১৮ তারিখের উড়ানে দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া ও আফগানিস্তানের উড়ান বন্ধ করে দেওয়ায় বিমানবন্দর থেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হন। এখন ঘরে বসেই দেশে ফেরার দিন গুণছেন।


ম্যানিলা থেকে ফোনে এবিপি আনন্দকে চয়ন জানিয়েছেন, ‘অনেকদিন ধরেই ম্যানিলায় গণ পরিবহণ বন্ধ। রাস্তায় কার্যত কোনও যানবাহনই নেই। কয়েকটি সুপারমার্কেট খোলা থাকছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য ঘর থেকে একজন করে বেরোতে পারছে। বাকি সময়টা আমরা ঘরে বসেই কাটাচ্ছি। অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। আমাদের কিছু অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাস তেমন কিছু সাহায্য করছে না। শুধু আমাদের সবার নাম লিখে নিয়ে গিয়েছে।।’

চয়ন আরও জানিয়েছেন, ‘করোনা ভাইরাসে এখনও পর্যন্ত ম্যানিলায় আক্রান্ত ৫০১। ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাত আটটা থেকে ভোর পাঁচটা অবধি কার্ফু জারি থাকছে। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। ওরা সবাই টেনশনে আছে।’

চয়নের মতো একইরকম সমস্যায় অন্যান্য বাঙালিরা। ভারতের অন্যান্য প্রদেশ থেকেও অনেকে ফিলিপিন্সে নানা কাজে গিয়ে এই মুহূর্তে আটকে। তাঁরা বুঝতে পারছেন না কবে দেশে ফিরতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁদের আর্জি, ‘উড়ানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে যাঁরা সুস্থ আছেন, অন্তত তাঁদের বাড়ি ফিরতে দেওয়া হোক। না হলে ফিলিপিন্সে যে ভারতীয়রা আছেন, তাঁদের সমস্যা বাড়বে। তাঁদের কথা ভাবুক সরকার।’

সন্দীপ নাগর নামে এক ভারতীয় পড়ুয়া জানিয়েছেন, ‘সুপারমার্কেটগুলিতে প্রচণ্ড ভীড় হচ্ছে। আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এত লোকের সঙ্গে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকাও তো ঝুঁকির। এখানে চিকিৎসার খরচও অনেক বেশি। এদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভারতের মতো উন্নত নয়।’

সিমরন গুপ্তে নামে অপর এক ভারতীয় পড়ুয়া জানিয়েছেন, ‘ডাক্তারি পড়ুয়া হিসেবে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্বেগ বুঝতে পারছি। তবে আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, দেশে ফিরে কোয়ারেন্টিনেই থাকব। আমরা শুধু দেশে ফিরতে চাই।’