কলকাতা: করোনায় মৃত্যু হল ফলতার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের। কালীঘাটের বাসিন্দা ওই বিধায়ক দীর্ঘ একমাস একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিগত কয়েকদিন ধরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। আজ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ৬৪ বছরের তৃণমূল নেতার। ৩৫ বছরের সঙ্গীকে হারানোয় শোকপ্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


ট্যুইটে তিনি লেখেন, তমোনাশ ঘোষ তৃণমূলের ৩ বারের বিধায়ক। একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোষাধক্ষ্যের পদও সামলেছেন। ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ওই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সতীর্থের মৃত্যুতে শোক বিহ্বল হয়ে পড়েছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রয়াত বিধায়ককে দেখতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজ্য সরকারের খাদ্য দফতেরর মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও।


তমোনাশ ঘোষ ছাড়াও তৃণমূলের আরেক বিধায়ক তথা মন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তিনি সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের আরও এক হেভিওয়েট নেতা নাকি করোনা আক্রান্ত। সুজিত বসুর পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মদন মিত্র এবং তাঁর পরিবার, এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তৃণমূল বিধায়কের মৃত্যুতে একদিকে যেমন সরকারকে দুষেছেন, অন্যদিকে কোয়ারেন্টিন মেনে চলারও অনুরোধ করেছেন রাজ্যে বিজেপির এই শীর্ষ নেতা।


দিলীপ এদিন বলেন, “তৃণমূল সরকারের কোনও ক্ষমতাই নেই, নিজের লোককেই বাঁচাতে পারল না। দায়িত্বজ্ঞানহীন। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর নেতা মন্ত্রীরা লকডাউন ভেঙে রাস্তায় ঘুরে বেরিয়েছেন। আর কেস খাচ্ছি আমরা।” আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্যের এক মন্ত্রী, সুজিত বসু করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সৌভাগ্যবশত তিনি ফিরে এসেছেন। সুস্থও। শোনা যাচ্ছে মদন মিত্র ও তাঁর পরিবারের করোনা হয়েছে।” দিলীপ ঘোষ এও স্বীকার করে নেন, বিজেপি-র কিছু কর্মীও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কোয়ারেন্টিন মেনে চলার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।


যদিও দিলীপ ঘোষের এই দাবি উড়িয়েছেন স্বয়ং মদন মিত্র। রাজ্যের প্রাক্তন ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, “করোনা পজিটিভ নই। একমাত্র বিজেপি পজিটিভ হলেই আমাদের শরীর ছটফট করে।” তাঁর পাল্টা দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করেছেন। দিলীপ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে মদন মিত্র বলেন, “আমার দিকে না দেখে গুজরাতের দিকে তাকান।” প্রসঙ্গত, গুজরাত এই মুহূর্তে দেশের করোনা আক্রান্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। মহারাষ্ট্র, দিল্লির পরই আক্রান্তের নিরিখে রয়েছে গুজরাত। সারা ভারতে এখন মোট আক্রান্ত ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ১৮৩। মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭৬ জনের। সংক্রমণ-মুক্ত ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬৮৫ জন।