মুম্বই: দেশে দিনপ্রতি করোনা সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ হাজার। মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১৬ লক্ষ ছুঁতে চলেছে। আর কোনও একক রাজ্যে মোট সংক্রমিত মানুষের সংখ্যার নিরিখে এখনও তালিকায় সবার উপরে মহারাষ্ট্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাই তড়িঘড়ি আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত ফের লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে দিল উদ্ধব ঠাকরে সরকার।


কেন্দ্রীয়  স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে এ রাজ্যে নতুন করে ৯ হাজার ২১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ। মারা গিয়েছেন ১৪ হাজারের বেশি। এই অবস্থায় আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রা্জ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় কুমার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, লাগামছাড়া করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে আপৎকালীন ভিত্তিতে।

লকডাউনে কী খোলা থাকবে, কী বন্ধ থাকবে, সে ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকারি অফিস খোলা থাকবে। বেসরকারি অফিসগুলি খুললেও তাতে ১০ শতাংশের বেশি কর্মী থাকতে পারবেন না। বন্ধ থাকবে থিয়েটার, ফুড কোর্ট এবং রেস্তোরাঁ। খুলবে না সিনেমা হল। খোলা থাকবে অত্যাবশ্যকীয় ও জরুরি জিনিসপত্রের দোকান। সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। রাস্তায় ভিড় করা যাবে না।জমায়েত নিষিদ্ধ। রাস্তায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। মেনে চলতে হবে নিরাপদ দূরত্ব বিধি।

জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা কিংবা এ ধরনের অত্যন্ত জরুরি দরকার ছাড়া রাস্তায় বেরোলে কড়া পদক্ষেপ করবে পুলিশ। খুব দরকার ছাড়া এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করা যাবে না।

কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেও বেশি মানুষকে জমায়েত হতে দেওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। বিয়েবাড়িতে সর্বাধিক ৫০ জনের বেশি লোককে নিমন্ত্রণ করা যাবে না। সর্বাধিক ২০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন শেষকৃত্যে। ফায়ারিং রেঞ্জ, জিম, টেনিস কোর্ট, ব্যাডমিন্টন, গল্ফ কোর্স খুলে যাবে, তবে তা সবই চালাতে হবে সরকার নির্ধারিত সুরক্ষা বিধি মেনেই। সুংমিং পুল অবশ্য বন্ধ থাকবে।

নিয়ম মেনে খোলা থাকবে সেলুন, বিউটি পার্লার। খবরের কাগজ ছাপা ও বিতরণে বাধা নেই। যান-বাহনের ক্ষেত্রেও নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ট্যাক্সিতে চড়তে পারবেন চালক-সহ সর্বমোট চার জন। রিকশ-য় চালক-সহ সর্বমোট তিন জন। বাইক বা সাইকেলে সর্বাধিক দুজন, তবে মাস্ক অবশ্যই থাকতে হবে প্রত্যেকের মুখে।

আনলক পর্বে মহারাষ্ট্রে  ‘মিশন নিউ বিগিন’ শুরু করে এবং সুরক্ষা-বিধি মেনে অনেক কিছুতে ছাড় দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়তেই থাকায় গত মাসের গোড়ায় রাজ্যে লকডাউনের সীমা ৩১ জুলাই অবধি বাড়ানো হয়। ফের লকডাউন বাড়ানো হল ৩১ অগস্ট অবধি।