গুয়াহাটি: তৃণমূল (TMC) যত আসবে, অসমে (Assam) বিজেপির ততই ভাল হবে। কারণ, কংগ্রেসকে ভাঙালে, আখেরে তো লাভ হবে বিজেপিরই। খোঁচা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার (Himanta Biswa Sarma)।  
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে হিমন্ত বলেছেন, তিনি অসম ও ত্রিপুরায় যতই আসবেন, তাতে আমাদেরই লাভ হবে। 


তাঁর তীর্যক মন্তব্য,  লাল কার্পেট বিছিয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) স্বাগত জানাবেন। একইসঙ্গে বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়েও তিনি তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছেন। অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, বিরোধী ভোট নয়, বিজেপির ভোট কেটেই অসম জয় করবে তৃণমূল।


উল্লেখ্য, ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার বাইরেও সংগঠন শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়েছে। বাংলার দুই প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরা ও অসমে তৎপরতা বাড়িয়েছে তৃণমূল। কিছুদিন আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা সফরে গিয়েছিলেন। তাছাড়া, তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা বর্তমানে ত্রিপুরায় দলের সংগঠন বিস্তারের প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। অসমের ক্ষেত্রেও একই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূল। 


কিছুদিন আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অসমের শিলচরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব। জাতীয় কংগ্রেস মুখপাত্র ও মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী ছিলেন সন্তোষ মোহন দেবের  কন্যা। 


ইতিমধ্যেই অসমে তৃণমূলের হয়ে সক্রিয়তা বাড়িয়েছেন সুস্মিতা দেব। এদিন শিলচরে শুরু হয়েছে তৃণমূলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান। শিলচরের একটি কমিউনিটি হলে প্রায় ৩০০ সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে। সুস্মিতা দেব দলে যোগদানকারীদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে তিনি বরাক উপত্যকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রয়াত সন্তোষ মোহন দেবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন।  অনুষ্ঠানে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেছেন সুস্মিতা দেব। কেন্দ্রের সম্পদ নগদীকরণ প্রকল্পেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। একইসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাজকর্মেরও সমালোচনা করেছেন। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ জুটির জয়রথ থমকে দেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন সুস্মিতা দেব। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস অসম, কেরল, পুদুচেরিতে যা পারেনি, বাংলায় তা করে দেখিয়েছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু বাংলার নেত্রী নেত্রী নন। দলের সাধারণ সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, শুধু অসম ও ত্রিপুরাই নয়, দিল্লি থেকেও বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে পরাস্ত করবে তৃণমূল। একইসঙ্গে তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে খেলা হবে স্লোগানও। 


কিছুদিন আগেই তিনি রাজ্যে কংগ্রেসের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কংগ্রেস এখন কার্যত দিশাহীন। অসমে বিরোধী দলের স্থান শূন্য হয়ে রয়েছে। তৃণমূল এই স্থান পূরণ করতে পারবে।


এভাবে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূলের অসমের রাজনীতিতে জায়গা করে নেওয়ার প্রয়াসকে কটাক্ষ করে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, তৃণমূল যত আসবে, অসমে বিজেপির ততই ভাল হবে। কারণ, কংগ্রেসকে ভাঙালে, আখেরে তো লাভ হবে বিজেপিরই।