ডানকুনি: বর্ধমানে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করে বসেছিলেন, “দেশী গরুর দুধে রয়েছে সোনা। আর সেকারণেই দুধের রং হলদেটে।” নয়া ‘গো-তত্ত্বের’ আবিষ্কারক দিলীপ আরও বলেন, “ভারতীয় গরুর পিঠে রয়েছে কুঁজ। বিদেশি গরুর কুঁজ হয় না। বিদেশি গরুর পিঠ মোষের মতো হয়। ওই কুঁজে সোনা থাকে, তাই বলা হয় স্বর্ণনাড়ি। কুঁজে আলোকরশ্মি পড়লেই সোনা তৈরি হয়”। দিলীপের এই বক্তব্যের পরই দেশ জুড়েই শুরু হয় রঙ্গ তামাশা। হোয়াটসঅ্যাপে চালান হতে থাকে একের পর এক হাস্যরসের উপাদান। এইসব কিছুর মধ্যেই এবার ডানকুনির এক গো-পালক ঘটিয়ে ফেললেন আরও এক হাস্যকর ঘটনা। শুনেছেন গরুর দুধে সোনা আছে, তাই গরু, বাছুর নিয়ে তিনি হাজির হয়েছেন গোল্ডঋণ সংস্থার দরজায়। গরু-বাছুরের বদলে দিতে হবে স্বর্ণঋণ। নাছোড়বান্দা ওই ব্যক্তিকে বোঝাতে কালঘাম ছুটল কর্মীদের। এই ঘটনায় আবার দিলীপ ঘোষকে টিপ্পনি করে নোবেলের দাবি করে বসলেন গরলগাছার তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংহ।


এদিন ডানকুনিতে একটি গোল্ডলোন সংস্থার কাছে ঋণ নিতে আসা ওই ব্যক্তি বলেন, “আমি এখানে গোল্ডলোন নিতে এসেছি আর সেকারণেই সঙ্গে নিয়ে এসেছি গরু। আমি শুনেছি গরুর দুধে সোনা আছে। আমার পরিবার পুরোপুরি গরুর ওপর নির্ভরশীল। আমার কাছে ২০টি গরু আছে। লোন পেলে আরও গরু কিনে ব্যবসা বাড়াতে পারব।”


গরলগাছা পঞ্চায়েত প্রধান এই ঘটনা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। টিপ্পনি করে তিনি বলেন, “গরুর দুধে সোনা আছে, এইসব কথা বলে যে পরিস্থিতি তিনি তৈরি করলেন, তাঁর জন্য দিলীপ ঘোষকে নোবেল দেওয়া উচিত। প্রতিদিন কেউ না কেউ গরু নিয়ে আসছেন আর জিজ্ঞাসা করছেন, তাঁরা কত টাকা ঋণ পেতে পারেন। তাঁরা বলছেন, এক একটি গরু রোজ ১৫-১৬ লিটার করে দুধ দেয়। সেক্ষেত্রে তাঁরা কত টাকা ঋণ পাবেন। একজন রাজনৈতিক নেতার উচিত খাদ্য, বস্ত্র, অন্ন নিয়ে কথা বলা। এই ঘটনায় আমার লজ্জা হচ্ছে। ”