কলকাতা: #বাঙালিপ্রধানমন্ত্রী। #BengaliPrimeMinister। এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম এই হ্যাশট্যাগ নিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চেয়ে একের পর এক ট্যুইট ভেসে উঠছে। যে ট্রেন্ডে পা মিলিয়ে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী পদে মমতার হয়ে জোরাল সওয়াল করেছেন মনোজ তিওয়ারির মতো রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে শুরু করে দেবাংশু ভট্টাচার্যের মতো জনপ্রিয় যুবনেতা।


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে দেশের শাসনভার ধরে রাখে। প্রধানমন্ত্রী পদে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি বাংলায় অভাবনীয় সাফল্য পায় বিজেপি। সেই সময় থেকেই নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সংঘাত শুরু হয়। রাজ্যে পালাবদলের হাওয়া তৈরি করার জন্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় একের পর এক জনসভা করেন নরেন্দ্র মোদি। এবং সেই জনসভা থেকে মমতার উদ্দেশে করা মোদির কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা নিশানা করে ভোটপর্বে প্রচার সেরেছিলেন মমতা।


বিধানসভা নির্বাচনের অবশ্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় থেকে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই। 'পরিবর্তনের পরিবর্তন' ডাক দিয়েও ক্ষমতা দখল করতে পারেনি বিজেপি।


যদিও নির্বাচনী অধ্যায় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দুই হেভিওয়েট রাজনীতিকের দ্বন্দ্ব চলছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলা নিয়ে যে সংঘাত চরমে পৌঁছয়। কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মমতার যোগ না দেওয়া নিয়ে চর্চা হয়। যদিও সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য দেখা করে ঘূর্ণিঝড়ে বাংলার ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান দিয়ে আসেন মমতা। তারপরই নবান্ন সূত্রে জানা যায় যে, বিপর্যয় মোকাবিলায় আরও বৈঠক ও কর্মসূচি থাকায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে নিতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও প্রধানমন্ত্রীর ঘরের বাইরে মমতাকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। যা নিয়ে ক্ষোভ জানান স্বয়ং মমতা। ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে ওঠে। দুই শিবির থেকেই পরস্পরকে আক্রমণ করে বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি দেওয়া হয়।


সেই সংঘাতের রেশ দ্বিগুণ করে এক্সটেনশনে থাকা রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়াদিল্লিতে রিপোর্ট করতে বলে কেন্দ্র। যা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মমতা। এবং আলাপন চাকরিতে এক্সটেনশন না নিয়ে অবসর নেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন তিনি।



কেন্দ্র-রাজ্য এই সংঘাতের আবহেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আচমকাই ভাইরাল হয়েছে হ্যাশট্যাগ বাঙালি মুখ্যমন্ত্রী। সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে আমজনতা, অনেকেই মমতাকে ২০২৪ লোকসভা ভোটে কেন্দ্রের মসনদে দেখতে চেয়েছেন। রবিবার থেকেই মমতার ছবি দিয়ে ‘বাঙালি প্রধানমন্ত্রী’ হ্যাশট্যাগে প্রচার শুরু হয়। জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি ট্যুইট করেছেন, ‘বাংলা আজ যা ভাবছে, ভারত আগামীকাল তা ভাববে। ওদের সোনার বাংলা গড়ার মডেল ব্যর্থ হয়েছে। দিদিই আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। যেভাবে উনি উন্নয়নের মডেল বাস্তবায়িত করে বাংলাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন’। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, দলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই যোগ দিয়েছেন এই প্রচারে।





হ্যাশট্যাগ বাঙালি প্রধানমন্ত্রী প্রচারে সামিল আমজনতাও। কেউ লিখেছেন, ‘২০২৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মমতাই যোগ্য’। কারও ট্যুইট, ‘ভারত বাংলার মেয়েকে চায়’। সব মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম।