কলকাতা: ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে সুদূর ফিলিপিন্সের একটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে সেখানে পাড়ি জমান পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন তরুণ। তাঁরা ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় পৌঁছে ক্লাসও শুরু করে দেন। কিন্তু এক সপ্তাহ ক্লাস করার পরেই করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সারা দেশে লকডাউন জারি করে ফিলিপিন্স সরকার। ভারতে ফেরার উড়ানও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার চয়ন নাথ, শাকিল আহমেদ পেয়াদা সহ বেশ কয়েকজন বাঙালি ও ভারতীয় পড়ুয়া। তাঁরা কবে দেশে ফিরতে পারবেন জানেন না।


ম্যানিলা থেকে ফোনে এবিপি আনন্দকে শাকিল জানালেন, ‘এক মাস আগে আমার বন্ধু চয়ন নাথ এবং আরও কয়েকজনের সঙ্গে আমি ম্যানিলায় আসি। আমাদের ক্লাস শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ পরেই লকডাউন জারি হয়। এর মধ্যেই ভারত সরকার সব উড়ান বন্ধ করে দেয়। ফলে আমরা দেশে ফিরতে পারছি না। এখানে ৩০ এপ্রিল অবধি লকডাউন জারি হয়েছে। লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে পারে। ফলে আমরা কী করব জানি না।’

লকডাউনের মধ্যে শাকিল ও তাঁর বন্ধুদের কীভাবে দিন কাটছে? এ বিষয়ে কুলপির এই তরুণ জানালেন, ‘এ মাসের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত আমাদের অনলাইন ক্লাস হয়েছে। তারপর ক্লাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার কবে ক্লাস শুরু হবে এখনই বলতে পারছি না। আমাদের বাড়ি থেকে বেরোনোর উপায় নেই। শ্যুট অ্যাট সাইটের অর্ডার দিয়েছে সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত ম্যানিলায় কাউকে গুলি করা হয়েছে বলে শুনিনি। আমরা তিনজন ভারতীয় একসঙ্গে আছি। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য সরকার একজনকে কোয়ারেন্টিন পাশ দিয়েছে। কিন্তু সুপারমার্কেটে লম্বা লাইন। সকালে গেলে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধে হয়ে যাচ্ছে। আমরা বাড়ির কাছেই ছোট দোকান থেকে চাল, সবজি কিনে রেখেছি। সেই খেয়েই দিন কাটছে। এর মধ্যে আবার সবজির দোকানটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার আমরা কী করব জানি না।’

শাকিল, চয়ন ও তাঁদের বন্ধুদের বাড়ির লোকজনও উদ্বিগ্ন। কিন্তু তাঁদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কোনও উপায় নেই। তাঁরা সবাই এখন লকডাউন ওঠা এবং উড়ান চালু হওয়ার অপেক্ষায়।