নয়াদিল্লি: প্রয়াত রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটে ছুটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অভিযোগের পরদিনই বিবৃতি দিয়ে তা খারিজ করলেন প্রাক্তন নৌপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল এল রামদাস। কেবলমাত্র গাঁধী পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কোনও নৌজাহাজ বরাদ্দ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
রাজীব গাঁধীকে ‘এক নম্বর ভ্রষ্টাচারী’ বলে আক্রমণ করার পরপরই গতকাল রামলীলা ময়দানে তাঁর সম্পর্কে ওই চাঞ্চল্যকর দাবি করেন মোদি। বলেন, আপনারা কি কখনও শুনেছেন, কেউ যুদ্ধজাহাজে চেপে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়েছেন? অবাক হবেন না। এমনটা হয়েছিল, আমাদের দেশেই। কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় নামী পরিবার, দেশের গর্ব আইএনএস বিরাটকে ব্যক্তিগত ট্যাক্সি হিসাবে ব্যবহার করেছিল। আইএনএস বিরাট সে সময় জলসীমান্ত পাহারায় ছিল। কিন্তু সেটি পাঠানো হয় গাঁধী পরিবারের ছুটি কাটানোর জন্য। ছুটি কাটাতে যাওয়া সেই লোকজনের মধ্যে তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও ছিলেন। এতে দেশের সুরক্ষা বিপন্ন হয়েছিল কি না?
রাজীব গাঁধী ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। প্রয়াত বাবা সম্পর্কে মোদির অভিযোগ ইতিমধ্যেই খারিজ করেছেন রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। কংগ্রেস নেতারাও এর নিন্দা করেছেন। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা মিডিয়া রিপোর্ট উদ্ধৃত করে ট্যুইট করেছেন, মিথ্যাচার, নজর ঘুরিয়ে দেওয়া আপনাদের সর্বশেষ অস্ত্র। আপনারা তো ভারতীয় বায়ুসেনার জেটবিমানকে নিজেদের ট্যাক্সি বানিয়েছেন। মাত্র ৭৪৪ টাকা ভাড়ায় ভোটের সফরে বায়ুসেনার বিমান ব্যবহার করেছেন।


রামদাস প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, গাঁধী পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কোনও যুদ্ধজাহাজই পাঠানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রী, তাঁর স্ত্রী আকস্মিক অসুস্থ হলে জরুরি প্রয়োজনে লাগতে পারে ধরে নিয়ে শুধু একটি ছোট হেলিকপ্টার তৈরি রাখা হয়েছিল কাভরাট্টিতে। বিবৃতিতে ১৯৮৭ সালের ঘটনাবলীর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজীব গাঁধী ও তাঁর স্ত্রী সনিয়া গাঁধী ত্রিবান্দ্রম থেকে লাক্ষাদ্বীপ যাচ্ছিলেন এক বৈঠকে যোগদানের জন্য। আইএনএস বিরাটে চেপেছিলেন তাঁরা। তিনি ওঁদের জন্য ডিনার পার্টির বন্দোবস্ত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন রামদাস। আর কোনও লোকজন বা অন্য কোনও জাহাজ ছিল না, এও জানিয়েছেন তিনি।
রামদাসের পাশাপাশি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ওই সফরে ব্যবহার করা জাহাজের কম্যান্ডিং অফিসার ভাইস অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) বিনোদ পাসরিচাও বলেছেন, ১৯৮৭-র সেই সরকারি সফরের সময় যাবতীয় প্রোটোকল নিয়ম মেনে পালন করা হয়েছিল। কোনও বিদেশি বা অতিথিই সেখানে ছিলেন না। যে দাবি করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুল।
যদিও আরেক প্রাক্তন নৌ কম্যান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) ভি কে জেটলি ট্যুইট করেছেন, রাজীব ও সনিয়া গাঁধী বঙ্গারাম দ্বীপে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন আইএনএস বিরাটে চেপে। ভারতীয় নৌবাহিনীর রসদ, সম্পত্তি ঢালাও ব্যবহার করা হয়েছিল। আমি সাক্ষী। আমি সেসময় আইএনএস বিরাটে মোতায়েন ছিলাম।