নয়াদিল্লি ও সেহোর: বিতর্কে প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। সেহোরে বিজেপি কর্মীদের সভায় ২০০৮ এর মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার অভিযুক্ত, জামিনে মুক্ত ভোপালের বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা বলেছেন, শৌচাগার সাফ করার জন্য মানুষ তাঁকে নির্বাচিত করেনি! এহেন মন্তব্যে প্রজ্ঞা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিকেই উপহাস, বিদ্রূপ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এই প্রেক্ষাপটেই প্রজ্ঞাকে বিজেপির অস্থায়ী সভাপতি জে পি নাড্ডা ‘তিরস্কার করেছেন’ বলে কয়েকটি সূত্রের দাবি। বিজেপি সদর দপ্তরে ডেকে পাঠিয়ে নাড্ডা তাঁকে ওই মন্তব্যের জন্য দলীয় নেতৃত্বের অসন্তোষের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে দলের কর্মসূচি, আদর্শের বিপরীত এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। দলীয় দপ্তর থেকে বেরনোর সময় এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি প্রজ্ঞা। প্রজ্ঞা কর্মিসভায় বলেছেন, এটা মনে রাখুন, আমরা এখানে নালা পরিষ্কার করতে আসিনি। আপনাদের শৌচাগার সাফ করা আমাদের কাজ নয়। যে কাজ করার কথা আমাদের, যা করার জন্য নির্বাচিত হয়েছি, সেটা সততার সঙ্গেই করব। আগেও বলেছি, আজও বলছি, ভবিষ্যতেও একই কথা বলব। তিনি আরও বলেন, একজন সাংসদের কাজ এলাকার উন্নয়নে বিধায়ক, কর্পোরেটর, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে হাত মেলানো। আমার ফোন নম্বর পেয়েছেন, ফোন করবেন। একজন সাংসদকে এমন কাজই দেওয়া উচিত যেটা তাঁকে মানায়। ভোপালে কংগ্রেস শীর্ষ নেতা দিগ্বিজয় সিংহকে হারিয়ে প্রথম বার সাংসদ হওয়া প্রজ্ঞার মন্তব্য অস্বস্তিতে ফেলেছে দলকে কেননা প্রধানমন্ত্রী ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানকে তাঁর সরকারের এজেন্ডার অন্যতম প্রধান বিষয় করেছেন। যদিও প্রজ্ঞার বেফাঁস কথা বলে শিরোনামে আসা নতুন নয়। লোকসভা ভোটের প্রচারে মহাত্মা গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলেছিলেন তিনি। তীব্র শোরগোল হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁকে ক্ষমা চেয়েছিলেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি এজন্য প্রজ্ঞাকে ক্ষমা করতে পারবেন না। প্রজ্ঞাকে শোকজ নোটিসও দেওয়া হয়। তিনি মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় কারাগারে ‘নির্যাতিত হয়েছিলেন’, ফলে তাঁর ‘অভিশাপেই’ ২৬/১১র মু্ম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় মহারাষ্ট্র এটিএস প্রধান হেমন্ত কারকারে নিহত হয়েছিলেন বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেও সমালোচিত হয়ে ক্ষমা চেয়েচিলেন প্রজ্ঞা। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র শোভা ওঝার কটাক্ষ, জনগণের সমস্যা সম্পর্কে বিজেপি ও তাদের এমপিদের তথাকথিত উদ্বেগই ফুটে উঠেছে প্রজ্ঞার মন্তব্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ‘অসারতা’ ‘প্রকট করে দিয়েছে’ ওই মন্তব্য।