নয়াদিল্লি: গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জওয়ানের মৃত্যুর পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রুলস অফ এনগেজমেন্ট বা সংঘর্ষের বিধিনিষেধ থেকে সরে এল ভারত।
১৯৯৬ সালে ভারত-চিন চুক্তি অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বা গোলাগুলি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল দুদেশের ওপরই। এর ফলে, ভারতের সেনার হাত-পা বাঁধা ছিল। পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছলেও, ভারতীয় সেনা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারত না। সেই চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিল ভারত। এখন সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজন পড়লে আগ্নোস্ত্রের ব্যবহার করার।
সেনার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ট্যাক্টিক্যাল পর্যায়ে পরিস্থিতি সামলানোর পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় কমান্ডারদের। ফলে, অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে, কমান্ডাররা নিজেদের ক্ষমতায় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে, এতদিন ধরে যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল, এই সিদ্ধান্তের ফলে তা আর রইল না। অর্থাৎ, এখন চিন কোনও প্রকার অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করলে, গোলাগুলি দিয়েই তার জবাব দেওয়া হবে।
সন্ধি চুক্তির এই সংশোধন গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ, ৬ দিন আগেই, পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারতীয় বাহিনীর ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় চিনা ফৌজ। হামলা চালানো হয় পেরেক ও কাঁটাতার লাগানো কাঠের তক্তা, রড, পাথর । এই হামলায় এক সামরিক কর্নেল সহ ২০ জন ভারতীয় জাওয়ানের মৃত্যু হয়। গত ৪৫ বছরে এটিই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ছিল।
রবিবার, লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেলানের বিপিন রাওয়াত। উপস্থিত ছিলেন সেনার তিন বিভাগীয় প্রধানও। রাশিয়ার ভিক্টরি ডে মিলিটারি প্যারেডে অংশ নিতে আগামীকাল মস্কো যাচ্ছেন রাজনাথ। সূত্রের খবর, সেখানে লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।