আমদাবাদ: ১৪ মাসের একটি ছোট্ট মেয়ের ধর্ষণের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে গুজরাত। এই ঘটনার অভিযুক্ত এক বিহারী জানাজানি হওয়ার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে টার্গেট করা হয়েছে ভিনরাজ্যের বাসিন্দাদের, মূলত শিকার হচ্ছেন বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে আসা মানুষরা। এই সব হামলায় যুক্ত অভিযোগে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৭০ জনকে।




১৪ মাসের বাচ্চাটি আমদাবাদ থেকে একশ কিলোমিটারের মত দূরে সাবারকান্থা জেলার একটি গ্রামে থাকে। ২৮ সেপ্টেম্বর তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় রবীন্দ্র সাহু নামে বিহার থেকে আসা এক শ্রমিককে। এরপর থেকেই জ্বলে উঠেছে গুজরাত। অভিযোগ, বেছে বেছে অগুজরাতিদের টার্গেট করা হচ্ছে, মূল শিকার হচ্ছেন বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে কাজের সন্ধানে আসা মানুষরা। মেহসানা, গাঁধীনগর, সাবারকান্থা, পাটান ও আমদাবাদ জেলায় গত সপ্তাহে বহু হামলা ঘটেছে। এর জেরে কিছু ভিন রাজ্যের বাসিন্দা জিনিসপত্র গুটিয়ে নিজেদের ঘরে ফিরে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।

২ তারিখ শদুয়েক মানুষ হামলা চালায় মেহসানার ভারনগরের একটি কারখানাতে, দুই বিহারী শ্রমিককে মারধর করে তারা। এই ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর দিন আমদাবাদের চাঁদলোধিয়া এলাকাতেও চলে ভাঙচুর, হামলাকারীরা দাবি করে, উত্তর ভারতের বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে।

ধর্ষিত শিশুটি ঠাকুর সম্প্রদায়ের। ভিনরাজ্যের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঠাকুর সেনা নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাঁদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অন্য রাজ্যের কোনও বাসিন্দাকে গুজরাতে কাজ করতে দেওয়া হবে না। কংগ্রেস বিধায়ক অল্পেশ ঠাকুর ওই সংগঠনের প্রধান, বিজেপি অভিযোগ করেছে, তিনিই এই সবের পিছনে রয়েছেন। শিশুটির জন্য বিচার চাওয়ার পাশাপাশি অল্পেশই প্রথম অগুজরাতি ইস্যুটি তোলেন, বলেন, গুজরাতে চাকরি ক্ষেত্রে গুজরাতিদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। পরে অবশ্য তিনি তাঁর সংগঠনের সদস্যদের অনুরোধ করেছেন শান্তি বজায় রাখতে, বলেছেন, অগুজরাতিরাও তাঁদের ভাই।

পুলিশ জানিয়েছে, এই সব ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৮টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, যে কোনওভাবে শান্তি বজায় রাখা হবে। ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা যে সব জায়গায় থাকেন, সেখানে পুলিশ প্রহরা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছড়ানো হয়েছে ঘৃণার বার্তা, তাই সোশ্যাল মিডিয়ার দিকেও নজর রাখা হয়েছে।