নয়াদিল্লি: দিল্লির করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এমনটাই জানালেন অমিত শাহ। সংবাদসংস্থাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যা প্রয়োজনের কথা দিল্লি সরকার বলেছে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, দিল্লি নিয়ে প্রতিদিন রিপোর্ট পাচ্ছি।


সেই রিপোর্ট যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। বহু টেস্ট করা হচ্ছে নিখরচায়। দিল্লিবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, আতঙ্কে ভুগবেন না, লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা করান। জ্বর বেশি হলে, আইসোলেশনে যান। ঘর ছোট হলে, আইসোলেশন সেন্টারে যান।


অমিত শাহ বলেন, দিল্লিতে করোনা-পরিস্থিতির ধীরে হলেও উন্নতি হয়েছে। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাড়ে ৫ লক্ষ সংক্রমণের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী। অনেকে দিল্লি থেকে পালানোর কথা ভাবছিলেন।


অমিত শাহের দাবি, ‘ওই সংখ্যায় সংক্রমণের পূর্বাভাসকে বদলেছে কেন্দ্র। দিল্লি সরকার, পুরসভা, কেন্দ্র তিন তরফের সমন্বয় ছিল জরুরি। সবাইকে নিয়ে একত্রে বৈঠক করায় পরিস্থিতির হয়েছে উন্নতি। সমন্বয়ে আগে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল দিল্লি সরকারের। ৩০ জুনের মধ্যে সব ঘরের কনটেইনমেন্ট সার্ভের সিদ্ধান্ত।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, দিল্লিতে করোনার জেরে মৃত ৪৫০ জনের দেহ পড়ে ছিল। আমরা দ্রুত সৎকারে নজর দিয়েছিলাম। সহযোগিতা করেছে দিল্লি পুরসভা ও দিল্লি সরকার। কাজ দিয়েছে টেলিফোনে এইমসের পরামর্শ দেওয়ার পরিকল্পনা। চিকিৎসকদের আলাদা টিম গড়া হয়েছিল। দিল্লির প্রতি ওয়ার্ডে নজর দেওয়া হয়েছে।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দিল্লি এনসিআর-এ মিলিত সিদ্ধান্তে কাজ হবে। দিল্লিতে করোনায় প্রতিটি মৃত্যু নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখন দিল্লিতে প্রতিদিন ১৬ হাজার টেস্টিং হচ্ছে। এলএনজেপি হাসপাতালে গিয়েছিলাম স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল বাড়াতে। দিল্লিতে কোনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি।


শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানোর আগে সব মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। এমনটাই জানালেন অমিত শাহ। বললেন, লকডাউন ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী-আমি সব মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলি। ১১ হাজার কোটি টাকা রাজ্যগুলির কাছে পাঠানো হয়। এরপর শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়।


তিনি মনে করিয়ে দেন, প্রতিবেশী রাজ্যে বাসে চলে যান শ্রমিকরা। যাঁদের ধৈর্য্যচ্যুতি হয়েছে, তাঁরা পায়ে হেঁটে গিয়েছেন। সবাইকে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সবার রোজগারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১০০ দিনের সময়সীমা ও টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এরপর কেউ কাজের জায়গায় যেতে চাইলে যেতে পারেন। তাঁদের জন্যও যানবাহনের ব্যবস্থা করা হবে। এলাকায় থেকেই রোজগারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।


অমিত শাহ বলেন, করোনাকে রুখতে আমরা সক্ষম হয়েছি। সুস্থতার হার ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৭ শতাংশ হয়েছে। প্রতি ১০ লক্ষে ভারতে করোনায় মৃত্যু ১১। গোটা বিশ্বে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। বিশ্বজুড়ে আর্থিক সঙ্কট হলে, ভারতই বা বাদ যাবে কেন? তবে ক্ষতি কমাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।