অমৃতসর: অমৃতসর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬১, আহত অন্তত ৭২। বিরোধীরা এই দুর্ঘটনার জন্য দোষ দিচ্ছে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে, প্রশ্ন করেছে, রেল লাইনের পাশে রাবণ দহন উৎসবে তারা অনুমতি দিল কেন। রেলও দোষ চাপিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর, তাদের বক্তব্য, তারা এমন কোনও উৎসবের অনুমতি দেয়নি।


গতকাল সন্ধেয় বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠান চলাকালীন এত বড় দু্র্ঘটনায় শোকে মুহ্যমান গোটা দেশ। স্থানীয় জোদা ফটকের কাছে রেল লাইনের পাশের মাঠে রাবণ দহন দেখতে ভিড় করেছিলেন অন্তত ৩০০ লোক। ঠিক তখন জলন্ধরমুখী একটি ট্রেন তাঁদের পিষে দিয়ে চলে যায়। মৃতদের মধ্যে শিশু রয়েছে বেশ কয়েকটি। মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহের মিডিয়া উপদেষ্টা জানিয়েছেন, প্রাথমিক রিপোর্টে মনে করা হচ্ছে, রাবণের কুশপুতুল পোড়ানোর সময় একের পর এক বাজি ফাটছিল, তখন লোকে রেললাইনের দিকে ছোটায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আর ঠিক তখনই মৃত্যুদূতের মত পাশাপাশি দুই লাইনে মুখোমুখি এসে পড়ে দৈত্যাকৃতি দুটি ট্রেন। ফলে উৎসবে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষ সরার সুযোগটুকুও পাননি।

বিরোধীরা অভিযোগের আঙুল তুলেছে রাজ্যের কংগ্রেস সরকার ও নভজ্যোত সিংহ সিধুর স্ত্রী ও প্রাক্তন বিধায়ক নভজ্যোত কাউর সিধুর দিকে। তিনিই এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন, অভিযোগ, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেন তিনি। নভজ্যোত অবশ্য হাসপাতালে এসে দাবি করেন, রাবণের মূর্তি পোড়ার ঠিক পর তিনি এলাকা ছাড়েন, আর তারপরেই ঘটে দুর্ঘটনা। এত বড় ট্র্যাজেডি নিয়ে রাজনীতি না করার জন্যও অনুরোধ করেছেন তিনি।



অকালি দলের নেত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কাউর বাদল অভিযোগ করেঠেন, রাজ্য সরকারই গোটা ঘটনার জন্য দায়ী। অকালি নেতা বিক্রম মাঝিতিয়া নভজ্যোত কাউরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার দাবি করেছেন। বিরোধীদের দাবি, অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই রেল লাইনের ধারে ওই রাবণ দহনের আয়োজন করে কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও বলেছেন, প্রাথমিক রিপোর্টে মনে হচ্ছে, এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে নিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন যাতে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া যায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য বক্তব্য, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে জোদা ফটকের ওই এলাকার আশপাশের গ্রামগুলি রাবণ দহন উৎসব করে, তবে রামলীলা হয় বেশ খানিকটা দূরে। এর আগে এমন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি ওই এলাকায়। তাঁদের দাবি, প্রচণ্ড জোরে বাজি ফাটতে থাকায় উৎসবে যোগ দেওয়া মানুষ ট্রেনের হর্ন শুনতে পাননি।