কোচি: ৯৩ বছর বয়সে এসে অবশেষে পেলেন স্বীকৃতি। প্রজাতন্ত্র দিবসে কেরলের মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক শঙ্কর নারায়ণ মেননকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। এই সম্মান পেয়ে খুশি প্রবীণ মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই সম্মান তাঁর জীবনযাপনে কোনও বদল আনতে পারবে না। প্রতিদিনের মতোই প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাবেন তিনি। যতদিন বাঁচবেন এভাবেই দিন কাটাতে চান তিনি।
এই প্রবীণ প্রশিক্ষকের দিন শুরু হয় ভোর পাঁচটায়। ঘুম থেকে উঠে তিনি নিজেদের পুকুরে স্নান সেরে নেন। এরপর মন্দিরে পুজো করে তিনি কলারিতে (মার্শাল আর্টের কেন্দ্র) চলে যান। সেখানে টানা তিন ঘণ্টা ধরে চলে কঠোর প্রশিক্ষণ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিনি নিজেও চালিয়ে যান মার্শাল আর্ট।
কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃতির বিষয়ে এই প্রবীণ প্রশিক্ষক জানিয়েছেন, ‘সরকার আমাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় ভাল লাগছে। তবে আমি এখনই থেমে যেতে নারাজ। আমি যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাব। এটা আমার কর্তব্য।’
মার্শাল আর্টের প্রাচীন ধরন হল কলারিপায়াত্তু। এই মার্শাল আর্টে বিশেষ দক্ষ শঙ্কর নারায়ণ মেনন। এই বয়সে এসে অবশ্য আর তাঁর পক্ষে সব মুভ করে দেখানো সম্ভব হয় না। কারণ, মার্শাল আর্টের এই ধরন বেশ কঠিন। তবে নিজে এখন আর করতে না পারলেও, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন এই প্রশিক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি সাত বছর বয়স থেকে মার্শাল আর্টের সঙ্গে যুক্ত। ফলে আমি মার্শাল আর্টের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছি। আমি এই বয়সেও অনেক স্টেপই কর দেখাই। তাতে আমার কোনও সমস্যা হয় না।’
শঙ্কর নারায়ণ মেননের ছেলে কৃষ্ণদাস জানিয়েছেন, ‘আমার বাবা কৈশোর ও যৌবনে কলারিপায়াত্তুতে সেরা ছিলেন। আমরা কুস্তিগীরদের মতো পেশিবহুল চেহারা গড়ে তুলি না। আমরা পেশিকে সবল ও নমনীয় করে তুলি। তার ফলে আমাদের প্রতিবর্ত ক্রিয়া অনেক ভাল হয়। আমার বাবার চেহারা মার্শাল আর্টের পক্ষে আদর্শ। তাঁর মুভ ছিল অসাধারণ। এখন সব মুভ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে বেশিরভাগ মুভই এখনও করে দেখান তিনি। সেটা করতে গিয়ে তাঁর পেশিতে টান ধরে না বা হাড় ভেঙে যায় না।’