ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের জেলে বন্দি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে শুক্রবার নাগাদ ভারতীয় কনস্যুলেট কর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে বলে জানালেন পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সল। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন ভারতীয় দূতাবাসের কর্তারা।
৪৯ বছর বয়সি প্রাক্তন ভারতীয় নৌবাহিনীর অফিসার কুলভূষণকে ২০১৭ সালের এপ্রিলে চরবৃত্তি, সন্ত্রাসবাদের দায়ে দোষী ঘোষণা করে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাক সামরিক আদালত। ভারত তাতে স্থগিতাদেশ চেয়ে কুলভূষণকে বাঁচাতে পরবর্তী নির্দেশ চেয়ে হেগের আন্তর্জাতিক ন্যয় আদালতে (আইসিজে) আবেদন করে। সম্প্রতি সেই আদালত পাকিস্তানকে নির্দেশ দেয়, কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে নতুন করে তাঁর বিচার করতে হবে, তাঁকে ভারতীয় কনস্যুলেটের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে, কেননা এটা তাঁর প্রাপ্য অধিকার।
ফয়সল ইসলামাবাদে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, পাকিস্তান এখানকার ভারতীয় হাইকমিশনকে বিষয়টি জানানোর নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা করছে।
এদিকে নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার বলেছেন, আন্তর্জাতিক ন্যয় আদালতের সাম্প্রতিক রায়ের আলোকে পাকিস্তানের কুলভূষণকে কনস্যুলেটের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমেই তাদের ভারতের বক্তব্য জানিয়ে দেওয়া হবে।
১৭ জুলাইয়ের আদেশে আইসিজে পাকিস্তানকে কুলভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া রায় ও সাজা, দুটিই খতিয়ে দেখতে ও পুনর্বিবেচনা করতে, তাঁকে আর দেরি না করে কনস্যুলেটের সাহায্য নিতে দেওয়ার কথাও বলে।
৪২ পৃষ্ঠার রায়ে আইসিজে পাকিস্তান কুলভূষণের ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশন ভেঙেছে বলেও জানায়। ওই কনভেনশনেই আছে যে, বিদেশে নিজেদের নাগরিক গ্রেপ্তার হলে তার সঙ্গে কনস্যুলেটের অফিসারদের দেখা করার অধিকার রয়েছে সব দেশের।
কুলভূষণকে ২০১৬-র ৩ মার্চ অশান্ত বালুচিস্তান প্রদেশে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছিল পাকিস্তান। সে ইরান থেকে তাদের ভূখণ্ডে ঢোকে বলে পাকিস্তানের দাবি। যদিও ভারতের বরাবরের দাবি, তাঁকে ইরান থেকে অপহরণ করা হয়। নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর ব্যবসার কাজে তিনি প্রায়ই ইরান যেতেন।