কলকাতা: ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করলেন এবং কথা বললেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ। ভিক্টোরিয়ায় মোদির সঙ্গে কথা অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদারেরও। যিনি আবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এখানেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেলফি তুললেন রুদ্রনীল ঘোষ। যা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।


এ প্রসঙ্গে রুদ্রনীল বলেছেন, ‘আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী, তিনি যে কোনও রাজনৈতিক দলেরই হতে পারেন। তাঁর সঙ্গে ছবি তোলা আনন্দের ব্যাপার। যাঁরা মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী এই দল করেন, তাই জোর করে তাঁদের অপছন্দ করব, আমার মনে হয় সেটা ঠিক নয়। আমি ওঁকে অবশ্যই পছন্দ করি। ওঁর সঙ্গে সেলফি তোলার অবকাশ হল। উনি সবার সঙ্গেই কুশল বিনিময় করছিলেন। আমারও সৌভাগ্য হল। তাই একসঙ্গে ছবি উঠল। রাজ্যপালও ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী।’

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে শনিবার কলকাতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। সফরসূচি অনুযায়ী, এদিন নেতাজি ভবন থেকে প্রথমে ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি নেতাজির মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। বিকেল ৪টে ১৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। সরকারি অনুষ্ঠান হলেও, আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতারা। প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানিয়ে তাঁকে প্রণাম করেন শুভেন্দু। সূত্রের খবর, ‘ভাল কাজ করছো।’ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে চা চক্রে শুভেন্দুকে বলেন মোদি। ‘ভাল কাজ করছে শোভনও।’ মোদিকে বলেন দিলীপ।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানিয়ে তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর একসঙ্গে নেতাজির নামাঙ্কিত গ্যালারির উদ্বোধন করেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপাল। কিছুক্ষণ পর পরীঘরের সামনে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ‘নেতাজির পত্রাবলি’ নামে একটি বইয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রকাশিত হয় নেতাজি স্মারক ডাকটিকিট এবং মুদ্রা।

এরই মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুরুর আগে জয় শ্রীরাম স্লোগান ঘিরে তাল কাটে অনুষ্ঠানের। বক্তব্য না রেখেই পোডিয়াম ছাড়েন মমতা। এরপর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যদের সংবর্ধনা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্রের মাটি এই পুণ্যভূমি, রামকৃষ্ণ দেব, সারদাদেবী স্বামী বিবেকানন্দ, এই পুণ্যভূমি দিয়েছে গুরুচাঁদ-হরিচাঁদ ঠাকুর, এই পূণ্যভূমি আমাদের দিয়েছে শ্যামাপ্রসাদ, প্রণব মুখোপাধ্যায়, সব মহাপুরুষকে প্রণাম জানাই।’

ভোটমুখী বাংলার রাজনৈতিক ময়দানে বিজেপি নেতাদের মুখে প্রায়ই শোনা যায় সোনার বাংলা গড়ার কথা। এদিন নেতাজিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে সেই সোনার বাংলা গড়ার প্রসঙ্গই উঠে এল। মোদি বলেন, ‘নেতাজি সোনার বাংলার প্রেরণা, আত্মনির্ভর বাংলা ও সোনার বাংলা গড়তে হবে, নেতাজির মতো আমাদেরও লক্ষে স্থির থাকতে হবে।’

এর আগে আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রী, দুপুরে প্রধানমন্ত্রী। নেতাজি ভবনে গিয়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানান দু’জনেই। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কয়েকজন বিজেপি নেতারও নেতাজি ভবনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা নিয়ে আপত্তি জানান নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর চেয়ারপার্সন সুগত বসু। তাই নেতাজি ভবনের বাইরেই অপেক্ষা করলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, স্বপন দাশগুপ্তরা। এই নিয়ে বেঁধেছে বিতর্ক।