নয়াদিল্লি: সংঘর্ষ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এ ব্যাপারে নানান প্রতিবন্ধকতা ছিল। কিন্তু এরপরও দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার।
ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যে জালিওয়ানওয়ালাবাগের পুণঃসংস্কার করা স্মৃতি সৌধের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আফগান-সংকট নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এখন, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে কোনও ভারতীয় সংকটে পড়লেই, ভারত সর্বশক্তি দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। তা করোনা পর্বই হোক বা আফগানিস্তান সংকট। সারা বিশ্ব তা প্রত্যক্ষ করে চলেছে। অপারেশন দেবী শক্তির মাধ্যমে কয়েকশো ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নানান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং পরিস্থিতিও কঠিন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেবী শক্তি অপারেশন আফগানিস্তান থেকে অনেক লোকজনকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা মর্যাদার সঙ্গে গুরু গ্রন্থ সাহেবও ভারতে ফিরিয়ে এনেছি।
জালিওয়ানাবাগ স্মারকের পুনঃসংস্কার হওয়া কমপ্লেক্স জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোনও দেশেরই তার ইতিহাস ভুলে যাওয়া উচিত নয়। দেশভাগের সময় ও পরে যা ঘটেছে, তা দেশের প্রতিটি প্রান্তে, বিশেষ করে, পঞ্জাবে দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জালিয়ানওয়ালাবাগ সেই স্থান, যা ভগত সিংহ ও উধম সিংহর মতো অসংখ্য বিপ্লবীকে দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মবলিদানে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পঞ্জাবের বীরভূমিকে প্রণাম জানাই। আজ সেই সহ নিরীহ ভাই-বোনকে স্মরণ করছি, যাঁদের স্বপ্ন এখনও জালিয়ানওয়ালাবাগের বুলেটবিদ্ধ দেওয়ালে ও শহিদ কুঁয়াতে দৃশ্যমান।
জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ১৯১৯-এর ১৩ এপ্রিলের ১০ মিনিট ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আখ্যান লিখে দিয়েছিল। আর এর জন্য আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপন করতে পারছি। এমন পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে জালিওয়ানাবাগ স্মারকের পুনঃসংস্কার আমাদের সকলের অনুপ্রাণিত হওয়ার দারুণ একটা সুযোগ এনে দিয়েছে।
দেশভাগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশভাগের সময় আমরা জালিওয়ানওয়ালাবাগের মতো আরও একটি ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছি। কঠোর পরিশ্রমী ও প্রাণবন্ত পঞ্জাবের মানুষ দেশভাগের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দেশভাগের এই যন্ত্রণা দেশের প্রতিটি প্রান্ত, বিশেষ করে, পঞ্জাবের পরিবারগুলি এখনও বোধ করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইতিহাসের এই বিভীষিকাগুলি কোনও দেশের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সেইজন্য ভারত প্রতি বছর ১৪ অগাস্ট ‘বিভাজন বিভীষিকা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।