ভ্লাডিভোস্টক: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় ইসলামি ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েকের প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।  মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদের কাছে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেছেন মোদি। সেইসঙ্গে টেলিভিশনে ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েকের প্রত্যর্পণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন। উল্লেখ্য, ভারতে আর্থিক তছরূপ ও উগ্র মতবাদে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে।


পঞ্চম ইস্টার্ন ইকনমিক ফোরামে বৈঠকের অবকাশে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয় মোদির। বৈঠকের পর তিনি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, মহাথির মহম্মদের সঙ্গে দারুণ একটা বৈঠক হল। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় ও সহযোগিতার প্রসার নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ওই বৈঠক সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল বলেছেন, মহাথিরের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও ‘পুনর্গঠন’ নিয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্দ্ধমান বিপদের প্রসঙ্গও তাঁদের আলোচনায় উঠে এসেছে। সুষ্ঠু প্রশাসন ও আর্থ-সামাজিক ন্যায়ের জন্য জম্মু ও কাশ্মীরের পুণর্গঠনের যৌক্তিকতার ব্যাখ্যা মহাথিরের কাছে করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই প্রসঙ্গেই দুই নেতার সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্দ্ধমান বিপদ মোকাবিলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

গোখেল জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদকে একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা বলে স্বীকার করে মহাথির বলেছেন যে, মালয়েশিয়া যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, গত ৫ অগাস্ট কেন্দ্র জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে। ভারতের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত একেবারেই দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়। পাকিস্তানকেও বাস্তবতা স্বীকার করে নেওয়ার পরামর্শ দেয় ভারত। অন্যদিকে, ভারতের ৫ অগাস্টের সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তান কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে আন্তর্জাতিক মহলে হাওয়া গরম করার কৌশল নেয়। এই কৌশলের অঙ্গ হিসেবেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মহাথিরকেও টেলিফোন করেছিলেন।

গোখেল জানিয়েছেন, জাকির নায়েকের প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গটিও প্রধানমন্ত্রী মহাথিরের কাছে উত্থাপন করেছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, দুই দেশের আধিকারিকরাই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রাখবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ তে ভারত ছেড়ে চলে যান জাকির নায়েক এবং মালয়েশিয়ায় চলে যান। ওই দেশে তাঁকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অধিকার দেওয়া হয়েছে। আর্থিক তছরূপ ও বিদ্বেষমূলক বক্তৃতার মাধ্যমে চরমপন্থায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে তাঁকে হাতে পেতে চাইছে।

মালয়েশিয়ার হিন্দু ও চিনের নাগরিকদের সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য তাঁর প্রকাশ্যে কোনও বক্তব্য পেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।