নয়াদিল্লি: ঋণখেলাপের মামলায় অভিযুক্ত পলাতক হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদির কাছ থেকে টাকা উদ্ধার শুরু করল পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)। কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রককে পিএনবি জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় মুদ্রায় ২৪.৩৩ কোটি টাকা (৩.২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আদায় করা সম্ভব হয়েছে।


কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ইউএস চ্যাপ্টার ১১ ট্রাস্টি ঋণ গ্রহীতাদের সম্পত্তির হিসেব করে জানিয়েছে, পিএনবি সহ ঋণ দেওয়া সংস্থাগুলিকে ১১.০৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮২.৬৬ কোটি টাকা) ফেরত দেওয়া সম্ভব। এরপর নীরব মোদি ও মেহুল চোকসির সংস্থার সম্পত্তির হিসেব খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতে আরও অর্থ ফেরত দেওয়া হতে পারে।’

কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ‘২০১৮ সালে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক লিমিটেড জানায়, নীরব মোদির তিন সংস্থা ফায়ারস্টার ডায়মন্ড, এ জাফি ও ফ্যান্টাসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সাদার্ন ডিস্ট্রিক্টে চ্যাপ্টার ১১ দেউলিয়া নিরাপত্তা আইনের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়ে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের সাহায্য চায় পিএনবি। ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই নিউ ইয়র্কের সাদার্ন ডিস্ট্রিক্টের দেউলিয়া আদালত পিএনবি-র আবেদন গ্রহণ করে জানায়, নীরব মোদির সম্পত্তি বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তার একটি ভাগ দেওয়া হবে। পিএনবি যাতে নীরব মোদি, মিহির বনশালী ও রাখি বনশালীকে আদালতে হাজির হয়ে বয়ান দিতে বাধ্য করতে পারে, সেই অনুমতিও দেয় দেউলিয়া আদালত। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ অগাস্ট দেউলিয়া আদালত নিযুক্ত পরীক্ষক তাঁর রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্টে নীরব মোদির সংস্থার জালিয়াতির কথা উল্লেখ করা হয়। আদালতে জানানো হয়, এই সংস্থাগুলি নিজেদের স্বাধীন বলে দাবি করলেও, সেগুলি আসলে নীরব মোদির নিয়ন্ত্রণেই ছিল। আদালত সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সংস্থাগুলির সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণদাতাদের অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয়। তার ফলেই অর্থ ফেরত পাচ্ছে পিএনবি।’

এর আগে ২০১৮ সালের পলাতক আর্থিক অপরাধী আইনে নীরবের ৩২৯.৬৬ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। পিএনবি-র ২০০ কোটি মার্কিন ডলার জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মামলায় নীরবের স্ত্রী অ্যামি মোদির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করেছে ইন্টারপোল।