নয়াদিল্লি: সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের বর্ষপূর্তি পালনের জন্য ইউজিসির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ পাঠানোয় রাজনীতি নেই, দেশপ্রেম রয়েছে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর। বিরোধী শিবির সরকারের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুললেও জাভরেকরের দাবি, এটা একেবারে হাস্যকর, ভিত্তিহীন। ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস’ পালন বাধ্যতামূলক করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
জাভরেকর বলেন, বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের পার্থক্য এখানেই যে, তারা শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে একটা কর্মসূচি আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছে, আর কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের সিদ্ধান্তগুলি পালনে বাধ্য করত। এক্ষেত্রেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ নয়, পরামর্শ পাঠানো হয়েছে। এতে রাজনীতি কোথায়? দেশপ্রেম রয়েছে। সার্জিক্যাল হামলা, সেনা জওয়ানরা যে সামরিক, অসামরিক কাজকর্ম করেন, সে ব্যাপারে পড়ুয়াদের অবহিত করা উচিত।
জাভরেকরের দাবি, পড়ুয়ারা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সুপারিশ করেছিল, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি সমাদরে পালন করা উচিত।
ইউজিসি গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে ২৯ সেপ্টেম্বর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস’ পালন করতে বলে বার্তা পাঠিয়েছে। কলেজগুলিকে ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (এনসিসি) প্যারেড, প্রাক্তন সেনাকর্তাদের ভাষণের অনুষ্ঠান করতে বলা হয়েছে। কিন্তু কেন গত বছর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস’ উদযাপন করা হয়নি, প্রশ্ন করা হলে জাভরেকরের সাফাই, একটা শুভ প্রস্তাব যে কোনও সময় কার্যকর করা যায়।
এদিকে প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল ট্যুইট করেছেন, সাহস থাকলে ইউজিসি ২০১৬-র যে ৮ নভেম্বর নোট বাতিল করা হয়েছিল, সেই দিনটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ডে পালন করুক। ওইদিন গরিব মানুষের জীবিকা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ইউজিসি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ২৯ সেপ্টেম্বর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস পালনের নির্দেশ দিয়েছে। এর উদ্দেশ্য কি শিক্ষিত করা না বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ? আরেকটা জুমলা।





কলকাতায় রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস পালিত হবে না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে জড়িয়ে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, এটা বিজেপির এজেন্ডা। ওরা ভোটের আগে ইউজিসিকে কাজে লাগিয়ে সেই এজেন্ডা পূরণের চেষ্টা করছে। এটা লজ্জার যে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ইউজিসিকে কাজে লাগাচ্ছে ওরা। আমরা ইউজিসির নির্দেশ পালন করব না।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, দিনটাকে ওরা যদি আমাদের জওয়ানদের বলিদানের স্মরণে পালন করতে বলত, তাহলে না হয় বুঝতাম। জওয়ানদের বলিদানের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সবসময় রাজনীতি, বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হয়েছে। কিন্তু বিজেপি চেষ্টা করছে তার মর্যাদা হানি, তাকে নিয়ে রাজনীতি করতে। এটা ঠিক নয়, আমরা সমর্থন করি না।