মুম্বই: চলতি সপ্তাহে দু-দুবার হাজিরা দিতে না পারার পর অবশেষে শুক্রবার ২০০৮ এর মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় এখানকার বিশেষ আদালতে উপস্থিত হলেন ভোপালের বিজেপি এমপি প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। দুজন সহকারীর সাহায্য নিয়ে আদালত কক্ষে আসেন তিনি। ১১ বছরের পুরানো এই মামলার বিচার চালানো আদালতের নির্দেশেই প্রজ্ঞা আজ হাজিরা দেন। মামলার অপর অভিযুক্তরাও উপস্থিত হন। বিশেষ এনআইএ বিচারক ভি এস পদলকর গেরুয়া বসনধারী প্রজ্ঞার কাছে মালেগাঁও বিস্ফোরণ সম্পর্কে কিছু বলার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না। এদিন বিচারক অভিযুক্তদের সামনে তাঁর আদেশ পড়ে শোনান যাতে তিনি তাঁদের সপ্তাহে অন্তত একবার আদালতে হাজিরা থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত আদালত ডাক্তার, পাঞ্চা (এক ধরনের সাক্ষী) মিলিয়ে ১১৬ জন সাক্ষীর বক্তব্য শোনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অতীতে বেশিরভাগ শুনানিতেই অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আদালতে তাঁদের হয়ে উপস্থিত ছিলেন।
এদিন বিচারক তাঁর আদেশ পড়ে শুনিয়ে সাক্ষীর আসনে ডেকে পাঠান প্রজ্ঞা, অপর অভিযুক্ত সুধাকর দ্বিবেদীকে। অন্য সাক্ষীদের বক্তব্যের উল্লেখ করে তাঁদের কাছে জানতে চান, ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর মহারাষ্ট্রে মালেগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার কথা তাঁরা জানেন কিনা। উত্তরে দুজনেই বলেন, আমার এ ব্যাপারে কিছুই জানা নেই।
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে প্রজ্ঞা বলেন, আদালত কতজন সাক্ষীকে জেরা করেছে, তাঁর জানা নেই।
এদিন প্রজ্ঞাকে আরাম করে বসার জন্য তাঁর বেঞ্চের ওপর লাল রঙের ভেলভেটের কাপড় বিছিয়ে দেওয়া হয়। বিচারক তাঁকে সাক্ষীর নির্দিষ্ট আসনে আদেশ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে বললে তিনি জানান, আদালতের দেওয়া চেয়ারে তিনি বসবেন না, জানালায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন।
লোকসভা ভোটে জয়ের পর এই প্রথম আদালতে এলেন প্রজ্ঞা। গত অক্টোবর এই মামলার চার্জ গঠনের সময় শেষবার তিনি আদালতে হাজিরা দেন।
গত মাসেই বিচারক পদলকর প্রজ্ঞা সহ সব অভিযুক্তকে অন্তত সপ্তাহে একবার হাজিরা দিতে বলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, একমাত্র গ্রহণযোগ্য যুক্তি, কারণ পেশ করলেই হাজিরা দেওয়া থেকে রেহাই মিলবে।
এই মামলায় প্রজ্ঞা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত সহ সাতজনের বিচার চলছে।
চলতি সপ্তাহে আদালতে হাজিরা দেওয়া থেকে প্রজ্ঞার অব্যাহতির আর্জি গত সোমবারই নাকচ করে বিশেষ আদালত।
লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ হওয়ার ফলে সেখানকার নানা নিয়মরীতি পালনের কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, তাঁর হাজিরা মামলার বর্তমান পর্যায়ে আবশ্যিক। বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী প্রশান্ত মাগু আদালতে জানান, অতি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বলে ভোপাল থেকে মুম্বই আসা প্রজ্ঞার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে গতকালের মতো রেহাই দিলেও শুক্রবার প্রজ্ঞাকে হাজিরা দিতে হবে, নইলে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় আদালত।
বুধবার পাকস্থলীর অসুখে ভোপালে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় প্রজ্ঞাকে। বৃহস্পতিবার সকালে ছাড়া পান।