লখনউ: # সাড়ে চার ঘন্টার রোড শো শেষে রাহুল গাঁধী জানান, প্রিয়ঙ্কা ও জ্যোতিরাদিত্যকে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকার গঠনের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটের পরিভাষা ব্যবহার করে তিনি বলেন, কংগ্রেস ফ্রন্ট ফুটে খেলবে উত্তরপ্রদেশে। রাজ্যে সরকার না গড়া পর্যন্ত তিনি ও তাঁর দল হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। কংগ্রেস ভাবধারায় পরিচালিত সরকার না হওয়া পর্যন্ত আমরা চুপ করে থাকব না, চাষি, গরিব, যুবকদের ন্যয়বিচার সুনিশ্চিত করব।
কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ওঁদের আশু লক্ষ্য অবশ্যই লোকসভা ভোট, কিন্তু এখানে কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠাও ওঁদের দায়িত্ব। তিনি প্রিয়ঙ্কা, জ্যোতিরাদিত্যকে জানিয়ে দিয়েছেন, সবার ন্যয়বিচার সুনিশ্চিত করবে, এমন সরকার উত্তরপ্রদেশে স্থাপন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁদের। উত্তরপ্রদেশে হৃত গৌরব ফেরাতে লড়ছে কংগ্রেস। রাহুল বলেন, উত্তরপ্রদেশ দেশের প্রাণকেন্দ্র। প্রিয়ঙ্কা, সিন্ধিয়াজিকে সাধারণ সম্পাদক করেছি, ওঁদের বলেছি, রাজ্যে বছরের পর বছর যে অন্যায়, অবিচার চলছে, তার বিরুদ্ধে ওঁদের লড়তে হবে। এমন একটা সরকারকে আনতে হবে, যারা ন্যয়বিচার দেবে।


# লখনউয়ের রাস্তায় বিপুল উন্মাদনার ঝড় তুলে রোড শো প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর। সম্প্রতি তাঁকে রাহুল গাঁধী পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে লখনউয়ে সোমবারের রোড শো দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে অভিষেক হল সনিয়া কন্যার। অসংখ্য কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক সঙ্গী হন তাঁর রোড শোয়ে। প্রিয়ঙ্কার অভিষেককে স্বাগত জানিয়ে তাঁকে গোলাপ, ফুলের মালা ছুঁড়ে দেন তাঁরা, তীব্র উচ্ছ্বাস দেখান। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে তাঁর গাড়ির মাথায় কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা ছিলেন। সর্বোপরি ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। ছিলেন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও। ২৫ কিমি যাত্রাপথে রাহুল, প্রিয়ঙ্কার ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় কর্মীদের মধ্যে। তাঁদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে অভিনন্দন গ্রহণ করতে দেখা যায় রাহুল, প্রিয়ঙ্কাকেও।
গতকালই প্রিয়ঙ্কা সফরের মুখে বিবৃতি দিয়ে অঙ্গীকার করেন, তিনি নতুন ধরনের রাজনীতি শুরু করতে চান, যাতে শরিক হবেন প্রতিটি মানুষ।
দলের দুই সর্বোচ্চ নেতা-নেত্রী আসছেন, তাই সকাল থেকে সাজ সাজ রব পড়ে যায় কর্মী, সদস্যদের মধ্যে। প্রস্তুতি চলতে থাকে। কর্মীরা পথচারীদের চা, জল, খাবারের প্যাকেট বিলি করেন। লাউডস্পিকারে বাজতে থাকে জাতীয়তাবাদী গান, স্লোগান। সিংহের পিঠে বসে আছেন দেবী রূপী প্রিয়ঙ্কাকে, এমন পোস্টারও দেখা যায়। তাতে লেখা আছে, মা দূর্গার রূপ বহেন প্রিয়ঙ্কাজি। আরেক পোস্টারে দেখানো হয়, ঠাকুমা প্রয়াত ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার সাদৃশ্য। প্রিয়ঙ্কার ছবি দেওয়া টি শার্ট পরা কংগ্রেস কর্মীদেরও চোখে পড়ে। ভিড়ের মধ্যে হাজির ছিলেন ‘প্রিয়ঙ্কা সেনা’ নামে তাঁর অনুগামী সংগঠনের সদস্যরাও। সারা ভারত মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব ট্যুইট করেন, লখনউয়ের নেহরু ভবনে প্রিয়ঙ্কা সেনা হাজির, উন্মাদনার জোয়ার বইছে।
কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক শৈলেন্দ্র তেওয়ারি নিজের গাড়িতে ব্যানার লাগান প্রিয়ঙ্কাকে স্বাগত জানিয়ে। ব্যানারে লেখা, আ গয়ি প্রিয়ঙ্কা, বাজ গয়া ডঙ্কা, ভ্রষ্টাচার কি আব লাগেগি লঙ্কা।