নয়াদিল্লি: রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রসঙ্গে নিজের মন্তব্যের জন্য হলফনামা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্যে ক্ষুব্ধ সর্বোচ্চ আদালত গত ১৫ এপ্রিল তাঁকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছিল। তাঁর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। রাহুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দিয়েছিলেন বিজেপি এমপি মীনাক্ষী লেখি। তিনি বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট যা বলেনি, তার মুখে সে কথা বসিয়েছেন রাহুল, বিভ্রান্তি ছড়াতে চেয়েছেন। এজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। তার প্রেক্ষিতেই সর্বোচ্চ আদালত তাঁকে নোটিস পাঠায়।
রাফালে ডিল সম্পর্কে মিডিয়ার বের করা যাবতীয় গোপন, বিধিবদ্ধ নথিপত্র এই ডিল নিয়ে আগের রায় রিভিউ করার আবেদন খতিয়ে দেখার ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ হিসাবে গণ্য করা যাবে, সু্প্রিম কোর্টের এই সাম্প্রতিক রায় সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই রাহুল অমেঠিতে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। বলেন, সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ। গোটা দেশ বলছে, চৌকিদার চোর। আজ বিরাট আনন্দের দিন এজন্য যে, সুপ্রিম কোর্টও তাতে সায় দিয়েছে, ন্যায়ের কথা বলেছে।
কিন্তু প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, তার বক্তব্য মিডিয়ায় ভুল ভাবে তুলে ধরেছেন রাহুল। বেঞ্চ বলে, আমরা পরিষ্কার বলছি, মিডিয়ায় রাহুল গাঁধীর বক্তব্যে এই আদালতের অভিমত বলে যা বেরিয়েছে, তা ভুল ভাবে হাজির করা হয়েছে। আমরা কখনই অমন অভিমত জানাইনি। আমরা কেবলমাত্র তথ্য-নথির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। রাজনৈতিক নেতাদের ভাষণে নিজেদের মতামত আদালতের মুখে বসানো থেকে বিরত থাকতেও বলে ওই বেঞ্চ।
রাহুল নিজের হলফনামায় জানিয়েছেন, আদালত ওসব কখনও বলেনি। তিনি উত্তপ্ত রাজনৈতিক প্রচারের আবহে ওই মন্তব্য করেছেন, বিরোধীরা যার অপব্যবহার করেছে। আদালতের রায় ভুল ভাবে দেখানোর কোনও অভিপ্রায়ই ছিল না তাঁর। তবে একইসঙ্গে তাঁর অনুযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রাফাল ডিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করে দাবি করেছেন যে, সরকারকে এই ইস্যুতে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার মীনাক্ষীর পিটিশনের শুনানি হবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।