কলকাতা: ৫ অগাস্ট ২০২০, অযোধ্যার রাম জন্মভূমিতে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ভুল কাজ’, বেনজির আক্রমণ পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে ‘আরএসএস প্রতিনিধি’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। আরও একধাপ এগিয়ে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি সিদ্দিকুল্লা বলেন, “আজ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঠিকই, তবে বিশ্ব জানে ওখানে মসজিদ-ই ছিল। কেয়ামত পর্যন্ত মসজিদ-ই থাকবে। কেউ জানে না, চাকা কোনদিকে ঘুরবে। অনেক সময় চাকা উল্টো দিকেও ঘোরে।”
বুধবার সরযূ নদীর তীরে রামজন্মভূমিতে প্রধানমন্ত্রী যখন রূপোর ইট প্রতিস্থাপন করছেন, গোটা দেশে জয়ধ্বনি দিয়েছে আরএসএস, হিন্দু মহাসভা, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ সহ একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ‘রামধর্ম’ প্রতিষ্ঠার জয়গান তুলে উৎসব করেছে বিজেপি। অন্যদিকে এই দিনটিকে ‘ব্যথার দিন’, ‘বেদনার দিন’ বলে দাগিয়ে দিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ নেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী একটি ফেসবুক লাইভে বলেন, “আমাদের কাছে দিনটি ধৈর্য্যের দিন। মনোবল বাড়িয়ে নেওয়ার দিন।”
তাঁর আরও বক্তব্য, “বাবরি মসজিদ ভেঙে স্থায়ী রামমন্দিরের ভূমিপুজো করে ভারতবর্ষের সামনে একটি কঠিন দিন এনে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভুল করেছেন।”
আরও পড়ুন: রামজন্মভূমির পর মিশন মথুরা, ‘মসজিদ গুড়িয়ে মন্দির নির্মাণ’, হুঙ্কার বিজেপি মন্ত্রীর
শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, বাবরি কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজেপি ও আরএসএস নেতৃত্বকেও ফেসবুক লাইভ থেকে একহাত নেন তিনি। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এক হাজার পয়তাল্লিশ পৃষ্ঠার রায়ে উল্লেখ করেছে, বল প্রয়োগ করে মসজিদের ভিতরে তালা ভেঙে মূর্তি রাখা হয়েছে। তাঁরা অস্বীকার করেননি। স্বীকার করেছেন, উগ্র হিন্দুত্ববাদী লেঠেল বাহিনী মসজিদ ভাঙার কাজ করেছে। মসজিদের নীচে কোনও মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ ছিল না।” সংশয় প্রকাশ করে মমতার মন্ত্রীর বক্তব্য, “আমাদের ধারণা নেই, মসজিদের ওপর কীভাবে মন্দির নির্মিত হবে।”
এদিকে মন্দির নির্মাণের তীব্র বিরোধিতা করে সর্বভারতীয় ইমাম সংগঠনের তরফে সাজিদ রাশিদি হুমকির সুরে বলেন, “ইসলাম বলে মসজিদ সবসময় মসজিদ-ই থাকে। আমরা বিশ্বাস করি নতুন কিছু নির্মাণের জন্য তা ভাঙা যায় না। মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়নি, তবে এখন মনে হচ্ছে মন্দির ভেঙেই মসজিদ হবে।”