তিরুবনন্তপুরম:  বন্যা-বিধ্বস্ত উত্তর কেরলের পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮। এরইমধ্যে মঙ্গলবার মধ্য কেরলের তিন জেলায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এজন্য লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার আলাপ্পুঝা, এর্নাকুলাম ও ইদুক্কি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও বুধবার উত্তরাঞ্চলের মালাপ্পুরাম ও কোঝিকোড়ের জন্যও এই সতর্কতা জারি হয়েছে বলে আইএমডি সূত্রে জানানো হয়েছে। এই জেলাগুলিতে ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বর্ষণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।


তিরুবনন্তপুরমে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-র ডিরেক্টর কে সন্তোষ বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ শক্তিশালী হয়েছে। ফলে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

মঙ্গলবার সকালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৮ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, ৪০ জন এখনও নিখোঁজ।

রাজ্যের ১,৩৩২ টি ত্রানকেন্দ্রে প্রায় ২.৫২ লক্ষ মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন মালাপ্পুরম ও ওয়েনাড় জেলা সফর করে ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই দুই জেলায় গত ৮ আগস্ট একের পর এক  ধসের ঘটনায় ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ওয়েনাড়ের একটি ত্রানশিবিরে বিজয়ন বন্যা-দুর্গতদের বলেছেন, সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমস্ত প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উদ্ধার অভিযানই এখন সরকারের অগ্রাধিকার। এরপর পুনর্বাসন ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।  তিনি বলেন, বহু মানুষই তাঁদের ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি হারিয়ে ফেলেছেন। ফসলেরও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এখনও কিছু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের সন্ধানের চেষ্টা চলছে।

রাজ্যের রাজস্বমন্ত্রী ই চন্দ্রশেখরন ও মুখ্য সচিব টম জোসও মুখ্যমন্ত্রীর সফরে ছিলেন। তাঁরা মালাপ্পুরমের  ত্রান শিবিরগুলিও ঘুরে দেখেন। সেইসঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মাল্লাপুরমে প্রবল বৃষ্টির কারণে ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯। ৩২ জন এখনও নিখোঁজ। ওয়েনাড়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৭।  ওয়েনাড়ের বন্যা বিধ্বস্ত এলাকাগুলি ও ত্রাণ শিবিরগুলি ঘুরে দেখেছিলেন এখানকার সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তিনি দুর্গতদের সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এদিকে, গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণ ও বন্যাজনিত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে কর্নাটকে। গত সপ্তাহে এই রাজ্যের প্রায় ৬.৭৭ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে আসতে হয়েছিল।

রাজ্যের বিভিন্ন বাঁধ থেকে জলের পরিমাণ কমছে বলে সরকারি সূত্রে জাননো হয়েছে। বন্যা দুর্গত বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর কমছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।