মেলবোর্ন: ‘ক্রিসপআর’ পদ্ধতি ব্যবহার করে মানবদেহের কোষে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হল অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষক দল। এই পরীক্ষা সফল হওয়ার পর এবার এই বিজ্ঞানীরা ‘ক্রিসপআর’ পদ্ধতি ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করতে চাইছেন। তাঁদের মতে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে ওষুধ তৈরি করতে পারলে মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।


‘ক্রিসপআর’-এর অর্থ হল ক্লাস্টার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড শর্ট প্যালিনড্রোমিক রিপিট। ভারতেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে করোনা সংক্রমণ রোখার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। দুই বাঙালি বিজ্ঞানী দেবজ্যোতি চক্রবর্তী ও সৌভিক মাইতি গত বছর থেকেই ‘ক্রিসপআর’ নিয়ে কাজ করছেন। তাঁরা এই পদ্ধতির মাধ্যমে সহজেই করোনা চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছেন।


অস্ট্রেলিয়াতেও একই পদ্ধতিতে গবেষণা প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। গবেষক শ্যারন লুইন জানিয়েছেন, ‘এই পদ্ধতিতে কম খরচে এবং সহজেই চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে তার জন্য খাওয়ার ওষুধ তৈরি করা জরুরি। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। আশা করি একদিন ওষুধ তৈরি করতে পারব।’


গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘ক্রিসপআর’-এর মাধ্যমে জিনে কিছু পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হয়। মানবদেহে যে কোষগুলি সংক্রমিত, সেগুলিকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করে দেওয়া হয় এই পদ্ধতির মাধ্যমে। ফলে সহজেই করোনা চিহ্নিত করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব হচ্ছে। 


একটি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক পত্রিকায় ‘ক্রিসপআর’ সংক্রান্ত এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তদের শরীরের কোন কোষগুলিতে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেটা প্রথমে খুঁজে বের করা হয়। তারপর ভাইরাস ধ্বংস করে দেওয়া হয়। শরীরের যে কোষগুলিতে সংক্রমণ ছড়ায়নি, সেগুলি যাতে সুরক্ষিত থাকে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা হয়। 


গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, ‘ক্রিসপআর’ পদ্ধতির মাধ্যমে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্টগুলিকেও ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে। ব্রিটেনে যে আলফা ভ্যারিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়েছে, তার উপরেও সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে এই পদ্ধতি। ফলে ভবিষ্যতে ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হলে করোনা রোখার ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী গবেষকরা।