নয়াদিল্লি: স্কুলে শিক্ষক বকাঝকা করায় হতাশায় আত্মঘাতী হল সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী। এমনই অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম দিল্লিতে। ওই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, স্কুলের শিক্ষক তাঁর মেয়েকে ‘চরিত্রহীন’ বলে বকুনি দিয়েছিলেন। পুলিশ ছাত্রীর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ইন্দ্রপুরী এলাকায় বাড়িতে মায়ের অনুপস্থিতিতে সিলিং ফ্যানে ফাঁস লাগিয়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ছাত্রীর মা পেশায় অ্যাডভোকেট ওই সময় আদালতে ছিলেন।
পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ছাত্রীর মা বলেছেন, গত শুক্রবার কাঁদতে কাঁদতে ফিরে তাঁর মেয়ে অভিযোগ করেছিল যে, তাকে এক শিক্ষক বকাঝকা ও গালিগালাজ করেছেন। এতে সে খুবই ভেঙে পড়ে। শনিবার স্কুলেও যেতে চায়নি সে। ছাত্রীর মা আদালতে কাজ থাকায় পরের দিন স্কুলে যেতে পারেননি। কিন্তু সোমবার তাকে নিয়ে স্কুলে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
শনিবার ছাত্রীটি স্কুলে যায়নি। সোমবারের অঙ্ক বিষয়ে বাড়ির কাজ করছিল সে। বাড়িতে একাই ছিল সে। বাড়িতে ফিরে মা মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
মায়ের দাবি, ছাত্রীর এক হাতে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর খবর অবশ্যই স্কুলকে জানাবে। বিদায় পৃথিবী’। অন্যহাতে সে লেখে, ‘আমি আমার মা ও ঠাকুরমাকে ভালোবাসি’। কব্জিতে সে লিখেছিল, ভগবান কৃষ্ণ, আমি তোমার কাছে আসছি’।
আগামী ২০ ডিসেম্বর মেয়েটির জন্মদিন। ওই জন্মদিনের জন্য সে সাগ্রহে অপেক্ষা করছিল বলে তার মা জানিয়েছেন।
মায়ের অভিযোগ, তাঁর মেয়ে প্রায়ই ক্লাসের শিক্ষকের বিরুদ্ধে গালাগালি ও হেনস্থার অভিযোগ করত। তিনি যখন এ ব্যাপারে মেয়ের বন্ধুদের কাছে খোঁজখবর করেন, তখন জানতে পারেন যে, দুজন শিক্ষক বকাঝকা করেছেন এবং এমনকি ‘চরিত্রহীন’ও বলেছেন।
মেয়ের অনুরোধে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের আগে স্কুল পরিবর্তনের সিদ্ধান্তও তিনি নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ছাত্রীর মা।
স্কুলের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, তারা তদন্তে সব রকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত। তারা নিহত ছাত্রীর মায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছে। সেই সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিজস্ব তদন্ত চালাচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ছাত্রীর মায়ের বয়ান রেকর্ড করা হবে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।