সাউদাম্পটন: চেতন শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার হিসাবে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক।চলতি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক। ভুবনেশ্বর কুমারের পরিবর্তে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েই তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান ৯.৫-১-৪০-৪।


মহম্মদ শামি তার চেয়েও বড় স্বীকৃতি সম্ভবত পেয়ে গেলেন শনিবার আফগানিস্তান ম্যাচ শেষ হওয়ার পর। তা-ও এক কিংবদন্তির কাছে। তাঁকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন সুনীল গাওস্কর। বলে দিলেন, শামির বোলিং দেখে তাঁর মনে পড়ে যায় ম্যালকম মার্শাল-অ্যান্ডি রবার্টসকে!

ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সম্প্রচারকারী চ্যানেলের হয়ে শামির সঙ্গে কথা বলছিলেন গাওস্কর। তখনই সানি সার্টিফিকেট দেন, ‘শামিকে বাউন্সার করতে দেখে মার্শাল ও রবার্টসকে মনে পড়ে যায়। দুজনই অসাধারণ পেসার ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, দুজনের বাউন্সার কপাল লক্ষ্য করে ধেয়ে আসত। আমাদের সময় অনেক পেসারই দারুণ গতিতে ভাল বাউন্সার করত। কিন্তু বেশিরভাগই মাথার ওপর দিয়ে যেত। একমাত্র মার্শাল আর রবার্টসের বাউন্সার কপাল তাক করে ছুটে আসত। শামির বাউন্সারও সেরকমই। ব্যাটসম্যানের কপাল লক্ষ্য করে ছুটে যায়।’

শামি জানান, ডেথ ওভারে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর পরিকল্পনাই ছিল স্টাম্প টু স্টাম্প বল করে যাওয়া। আর ইয়র্কার লেংথে বল করা। শামি বলেছেন, ‘ডেথ ওভারে শর্ট বল করলে রান গলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করেও ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল বাউন্ডারি পেরিয়ে যায়। কিন্তু ইয়র্কার লেংথে বল করলে মারমুখী ব্যাটসম্যানদের সামনে একটাই পথ খোলা থাকে। সামনের দিকে ব্যাট চালাও। তাতে উইকেট নেওয়ার ও রান আটকে রাখার সুযোগ বাড়ে।’

শামির সেই পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন গাওস্কর। বলেছেন, ‘একদম সঠিক পরিকল্পনা। স্টাম্প টু স্টাম্প বোলিং। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’ সানি মজা করে বলেন, ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের যে ম্যাচটির ফলাফল ‘বোল আউট‘-এ নির্ধারিত হয়েছিল, শামি খেললে প্রত্যেক বল স্টাম্পে লাগত। শনিবার আফগানিস্তান ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক করার সময় শামি দুবার বিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে দিয়েছিলেন।

মাত্র ২২৪ রান তোলার পর ভারতীয় শিবিরে যে হারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, ম্যাচের পর তা জানিয়েছেন শামি। বলেছেন, ‘টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ভাবছিলাম, ৩০০ না ৩৫০, কত রান উঠবে। তবে মাত্র ২২৪ রানে আটকে যাওয়ার পর ইনিংসের বিরতিতে হারের ভয় পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের কাছে হারতে হবে? তারপরই ঠিক করি, নিজেদের দক্ষতায় আস্থা রেখে বোলিং করব। যশপ্রীত বুমরা বলেছিল, উইকেট নেওয়ার জন্য ঝাঁপাব না। তাতে অনেক রান বেরিয়ে যেতে পারে। তার চেয়ে ওদের রান করতে দেব না। চাপে পড়ে ঝুঁকি নেবে। বড় শট খেলতে গেলেই আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানেরা আউট হবে। সেই পরিকল্পনা সফল হয়েছে।’