নয়াদিল্লি: ভারতীয় বাদুড়ের দুটি প্রজাতির মধ্যে করোনাভাইরাস জীবাণুর অস্তিস্বের প্রমাণ মিলল।


সম্প্রতি, ভারতীয় বাদুড়ের মধ্যে নোভেল করোনার জীবাণু আছে কি না, তা জানতে দেশের বিভিন্ন প্রজাতির বাদুড়ের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর বিজ্ঞানীরা। তাতে, তেরোপাস (ইন্ডিয়ান ফ্লাইং ফক্সেস) ও রুসেটাস (ফ্রুট ব্যাটস) -- এই দুই প্রজাতির মধ্যে করোনা জীবাণুর অস্তিত্ব মিলেছে। আইসিএমআর সূত্রে খবর, যে বাদুড়গুলির ওপর পরীক্ষা চালানো হয়, সেগুলি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাপ্ত।


সাধারণত বাদুড় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বহন করে থাকে। যেমন-- রেবিজ, হেন্দ্রা, নিপা ও ইবোলা। এর মধ্যে অনেকগুলি মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক। আবার বলা হচ্ছে, সার্স-সিওভি-২ করোনাভাইরাস যা কোভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী, তাও বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে এসেছে। বাদুড়ের ওপর যে সাম্প্রতিক গবেষণা চালানো হয়েছে, তা যৌথভাবে সম্পন্ন করেছে আইসিএমআর ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি(এনআইভি)। সেখানে বলা হয়েছে, বাদুড় হল ভাইরাসের প্রাকৃতিক রিজার্ভার। এর মধ্যে অনেকগুলি মানুষরে পক্ষ ক্ষতিকারক।


আইসিএমআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান ফ্লাইং ফক্সেস-এর ৫০৮ টি নমুনা এবং রুসেটাস-এর ৭৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে চারটি রুসেটাস এবং ২১টি ইন্ডিয়ান ফ্লাইং ফক্সেস-এর শরীরে ব্যাট-করোনাভাইরাস (বিটি-সিওভি) মেলে। আর এই কারণেই গবেষকরা নিশ্চিত হতে পারছেন না, যে বাদুড়ের থেকেই মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বিটি-সিওভি ও মানব শরীরে মেলা সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম করোনাভাইরাস ২ (সার্স-সিওভি-২)-এর যে যোগসূত্র তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন গবেষকরা।


আইসিএমআর-এর মহামারী ও সংক্রমিত রোগ বিভাগের প্রধান গঙ্গাখেড়কর বলেন, বাদুড়ের দুই প্রজাতির মধ্যে যে কোরনাভাইরাস মিলেছে, তার মানুষকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা নেই। বলা যেতে পারে, এক হাজার বছরে একবার হয়ত সেই ঘটনা ঘটে। প্রসঙ্গত, চিনা গবেষণার দাবি, বাদুড় থেকে প্যাঙ্গোলিন এবং সেখান থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। যদিও, এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ মেলেনি, যে কোনও মধ্যবর্তী প্রজাতির মাধ্যমে বাদুড় থেকে মানবশরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।