সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: দুটি কিডনিই বিকল। চলছে ডায়ালিসিস। কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্র নয় সে। কাল মাধ্যমিকে বসছে নিউ ব্যারাকপুরের তীর্থঙ্কর।


কোদালিয়া আগাপুর হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী তীর্থঙ্কর সরকারের কথায়, “আমার জীবন তো অনিশ্চিত, যদি মাধ্যমিকটা পাস করতে পারি ভাল লাগবে।”


শরীরের সঙ্গে তাঁর মনের লড়াই দীর্ঘদিনের। কিন্তু তীর্থঙ্কর এখন তাকিয়ে শুধুমাত্র মঙ্গলবারের দিকে। কারণ ওইদিনই মাধ্যমিকে বসতে চলেছে উত্তর চব্বিশ পরগনার নিউ ব্যারাকপুরের ছেলেটা, দু-টো বিকল কিডনি নিয়ে।


তীর্থঙ্করের বয়স তখন সবে তিন বছর। মেরুদণ্ডে একটি টিউমার ধরা পড়ে। সেটির অস্ত্রোপচার করার পর দেখা দেয় স্নায়ুর সমস্যা। ২০১৪তে যার চিকিৎসা করতে গিয়ে ধরা পড়ে ছাত্রের একটি কিডনি বিকল। তখন ক্লাস সিক্সে পড়ে তীর্থঙ্কর। আর গতবছর জানা যায়, তাঁর অন্য কিডনিও বিকল হয়ে গিয়েছে।


সপ্তাহে দু দিন করে চলে ডায়ালিসিস। সোমবারও হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার তো আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। তাই শরীরের কথা মাথায় না রেখে, এখন বইয়ে মুখ ডুবিয়ে রেখেছে কোদালিয়া আগাপুর হাইস্কুলের এই ছাত্রটি।


বাবা পেশায় অটোচালক। ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বক্ষণের জন্য পাশে রয়েছে মা-ও। মা তন্দ্রা সরকার বলছেন, “ছোট থেকে সমস্যা, সাহস যোগাচ্ছি, আমার একটি কিডনি দেওয়ার কথাবার্তা চলছে।” শরীরের সঙ্গে লড়াইয়ে জয় আসবে কিনা তা সময় বলবে, কিন্তু তার আগে তীর্থঙ্করের লক্ষ্য এখন সাফল্যের সঙ্গে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়া।