লখনউ: উত্তরপ্রদেশের গোমতীনগরে পুলিশের গুলিতে মৃত অ্যাপল সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার বিবেক তিওয়ারির শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। উত্তরপ্রদেশ সরকার বিবেকের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা ও চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। প্রয়োজন হলে এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও জানিয়ছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। তবে বিবেকের পরিজনরা প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। তাঁর মেয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘যে সরকার নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই সরকারের ভূমিকা কী?’


বিবেকের স্ত্রী কল্পনাও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘রাত দেড়টায় বিবেকের সঙ্গে আমার শেষবার কথা হয়েছিল। অ্যাপলের নতুন ফোন লঞ্চ হওয়ার কথা ছিল। সেই কারণে ওর বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছিল। সহকর্মী সানা খানকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ফেরার কথা ছিল ওর। রাত পৌঁনে তিনটেয় আমি যখন আবার ফোন করি, তখন অন্য একজন ধরে বলেন, বিবেকের দুর্ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসকরা গুলি লেগে মৃত্যুর কথা বলেননি। তাঁরা দুর্ঘটনার কথা বলেন। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়, সেখানে গিয়ে আমি বিবেকের গাড়িতে গুলির দাগ দেখতে পাই। ও যদি গাড়ি না থামিয়েও থাকে, তাহলে সেটা কি অপরাধ যে গুলি চালাতে হবে? আমার যোগীজির কাছ থেকে জবাব চাই।’

এই ঘটনা সারা দেশে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গতকাল রাতে এ বিষয়ে দিল্লিতে বৈঠক করেছেন বিজেপি-র শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এই বৈঠকে ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, দুই উপমুখ্যমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের বিজেপি প্রধান মহেন্দ্র পাণ্ডে। তাঁরা প্রত্যেকেই এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

আজ বিবেকের শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক ও স্থানীয় বিধায়ক আশুতোষ টন্ডন। মন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা মৃতের পরিবারের পাশে আছি। তাঁরা যাতে বিচার পান, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে এই মামলার শুনানির চেষ্টা করব। স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রধান সচিব ও জিডিপি-কে অনুরোধ জানাব, বড় শহরগুলিতে যেন সংবেদনশীল পুলিশকর্মীদের নিয়োগ করা হয়। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে।’

এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ও পি সিংহ বলেছেন, ‘বিবেক তিওয়ারির স্ত্রী ও মেয়েদের প্রতি আমার সমবেদনা আছে। আমিও এই ঘটনায় দুঃখিত। যাদের জন্য আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যায়, সেই পুলিশকর্মীদের শাস্তি দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেইসঙ্গে পুলিশকর্মীদের মানবিক আচরণের শিক্ষা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’