ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ দাস ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: অহঙ্কারী বিজেপি সরকারকে (BJP Government) ২০২৪-এ শিক্ষা দেবেন দেশবাসী। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) প্রয়াগরাজে (Prayagraj) পৌঁছে মোদি-যোগীকে (Narendra Modi-Yogi Adityanath) চ্যালেঞ্জ ছুড়ল তৃণমূলের (TMC) ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ (Rajya Sabha MP) দোলা সেন (Dola Sen) বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘লোকসভায় ৩০৩টি আসন পেয়ে অহংকার বেড়ে গেছে। ২০২১-এ বাংলার মানুষ শিক্ষা দিয়েছে। যেভাবে অন্যায় বাড়ছে, তাতে মনে হয়, ২০২৪-এ দুই ভাইকে উপযুক্ত শিক্ষা দেবেন দেশবাসী।’
প্রয়াগরাজে নৃশংস হত্যাকাণ্ড
গতকাল প্রয়াগরাজে একই পরিবারের পাঁচজনের নৃশংস খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দেওয়া এই ঘটনার সত্যানুসন্ধানে আজ প্রয়াগরাজে পৌঁছয় তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। দোলা সেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, উত্তরপ্রদেশের তৃণমূল নেতা ললিতেশ ত্রিপাঠী ও তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র এবং আরটিআই কর্মী সাকেত গোখেল। প্রয়াগরাজে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিযোগ সম্পর্কে বিশদে জেনে নেন দোলা সেনরা। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা। একই পরিবারের পাঁচজনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবিও ওঠে।
যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলে তৃণমূল বিবৃতি জারি করে প্রশ্ন তোলে, প্রয়াগরাজ হত্যাকাণ্ডের পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোথায়? কোথায় জাতীয় মহিলা কমিশন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মুখে কুলুপ কেন?
দোলা সেন বলেন, ‘এখনও অবধি অভিযোগ দায়ের হল না কেন? সিবিআই তদন্তের নির্দেশ এখনও পর্যন্ত কেন দেওয়া হল না? যাদের বিরুদ্ধে স্বজনহারারারা অভিযোগ করছেন, তাদের কেন এখনও অবধি হেফাজতে নিয়ে জেরা কেন করা হল না? মুখ্যমন্ত্রী কী করছেন? মোদিজির ছোট ভাই। তাঁর তো আসা উচিত ছিল এখানে।’
তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ বিজেপির
প্রয়াগরাজে তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সফর নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপি। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘২০১৪ তেও চেষ্টা করেছিলেন, ২০১৯-এও চেষ্টা করেছিলেন, পারেননি।’
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন, ‘এতদিন তো বলতেন মোদির সিবিআই। সেই সিবিআই, যে সিবিআই তদন্তকে ওঁরা রাজ্যের ক্ষেত্রে খারাপ বলতেন, বলতেন, সিবিআইকে দেওয়া উচিত নয়, সিবিআই তোতাপাখি। এখন নিজেরাই আবার সেই সিবিআই চাইছেন। এতো থুতু ফেলে থুতু চেটে খাওয়া।’
সম্প্রতি, বীরভূমের রামপুরহাট ও নদিয়ার হাঁসখালিতে তথ্যানুসন্ধান কমিটি পাঠায় বিজেপি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট দিয়ে বাংলায় ৩৫৫ ও ৩৫৬ ধারা জারির সুপারিশ করে সেই কমিটি। এই প্রেক্ষাপটেই প্রয়াগরাজে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি যোগী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দিল্লি-হিংসার পর গত শুক্রবার জাহাঙ্গিরপুরীতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছিল তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। এবার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম গেল প্রয়াগরাজেও।