রাষ্ট্রসংঘ: মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করতে চীনের ‘বাঁধ’ টপকে এবার নতুন করে খসড়া প্রস্তাব পেশ করল ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। আর এই নয়া খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দিল বিশ্বের আরও দুই শক্তিধর রাষ্ট্র ফ্রান্স ও ব্রিটেন।


প্রসঙ্গত, সপ্তাহ দুয়েক আগেই জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে বিশ্বের ত্রাস ঘোষণা করা থেকে আটকেছে চীন। রাষ্ট্রসংঘে চীন তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে ভারত সহ পি-থ্রি দেশের আবেদনকে ‘হোল্ড’ করে রেখেছে। শি শিনফিংয়ের দেশ জানায়, তারা ভারত-পাক সমস্যার সমাধানের জন্য পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত করতে চায়। যেখানে কোনও বৈরিতা থাকবে না এবং সৌহার্দ্যও বজায় থাকবে। যদিও ভারত বেজিংয়ের এমন আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। ২০০৯, ২০১৬ এবং চলতি বছরে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের আবেদনকে যেভাবে খণ্ডন করেছে তারা, তাতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক রুষ্ট। এবার চীনের আচরণ নিয়ে বিষদগার করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ইউএস সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পোম্পেও জানান, “মুসলিমদের প্রতি চীন যে কপটতা করছে তা বিশ্ববাসী মেনে নিতে পারছে না। চীন একদিকে নিজের দেশের ১০ লাখ মুসলিমদের উপর অত্যাচার করছে, আর অন্যদিকে নিরাপত্তা পরিষদে যু্দ্ধবাজ ইসলামিক সংগঠনগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে।” বিগত ১০ বছর ধরেই জইশ-ই-মহম্মদ প্রধানকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। শুধুমাত্র চীনের আপত্তিতে তা কার্যকর হয়নি। অতীতের মতো এবারও চীন নিজের ক্ষমতাবলে আজহারের ‘বর্ম’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


এমন অবস্থায় নয়া খসড়া প্রস্তাব এনে পাল্টা চীনের উপরই চাপ বাড়াল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফ্রান্স ও ব্রিটেনকে পাশে পেয়ে যাওয়ায় এতে মার্কিন দেশের কাজ আরও সহজ হবে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।


পিটিআই প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, যে খসড়া প্রস্তাব রাষ্ট্রসংঘে পেশ করতে চলেছে ট্রাম্পের দেশ, সেখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারির পুলওয়ামা নাশকতার ঘটনা। ওই প্রস্তাবে আজহারের সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের যোগাযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। জইশ-ই-মহম্মদ তৈরি করা এবং হরকত-আল-মুজাহিদিন (হরকত-আল-আনসার নামেও পরিচিত) থেকে জঙ্গিদের সেখানে যোগ দেওয়া, ইত্যাদি বিষয়ও তুলে ধরা হতে পারে ওই খসড়ায়।


এই খসড়া প্রস্তাব নিয়ে ১০ দিন পর্যন্ত প্রতিবাদ জানাতে পারবে না কোনও দেশ। এমনকি চীনও না। পিটিআই প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই খসড়া প্রস্তাব নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার পরই তা কাউন্সিলের কাছে পেশ করা হবে। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার পরই এই প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্দিষ্ট কমিটি। উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদে যেকোনও প্রস্তাব পাশ করাতে হলে ৯টি ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনও দেশে আপত্তি জানালে তা কার্যকর হয় না।