লখনউ: যেভাবে পুলিশ অ্যাপলের এরিয়া ম্যানেজার বিবেক তেওয়ারিকে গুলি করে মেরেছে তাতে স্তম্ভিত গোটা উত্তর প্রদেশ। ময়নাতদন্তে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে গুলি করা হয়েছে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে। ঘটনায় জনতার ক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে রাজ্যের আইনমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক পরিষ্কার অভিযোগ করেছেন, ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি ছিল, তারা এই খুনের ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করে।


পুলিশ নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও গাড়ি থামাননি। স্রেফ এই কারণে অ্যাপল আধিকারিক বিবেক তেওয়ারিকে পুলিশ গুলি করে মারে বলে অভিযোগ। ব্রিজেশ পাঠক বলেছেন, খুনীদের জেলে পচানো উচিত, দেওয়া হোক কঠোরতম শাস্তি। সেই সব আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক যারা গাফিলতি করেছে, খুন চেপে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ঘটনার বিচারের ভার ফাস্ট ট্র্রাক কোর্টকে দেওয়ার জন্যও আদালতকে অনুরোধ করেছেন তিনি যাতে আপনজন হারানো পরিবারটি দ্রুত ন্যায় বিচার পায়। ব্রিজেশ জানিয়েছেন, মৃত অ্যাপল কর্মীর পরিবার যাতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করতে পারে, তাই তাঁর কাছ থেকে সময় চেয়েছেন তিনি।



মন্ত্রী জানিয়েছেন, যেভাবে পুলিশ ঠাণ্ডা মাথায় বিবেক তেওয়ারিকে গুলি করে মেরেছে তাতে তাঁরা হতবাক। পুলিশ যে এমন নির্মম কাজ করতে পারে তা তাঁর বুদ্ধির অগম্য ছিল। তা ছাড়া ঘটনার প্রায় ১৭ ঘণ্টা পরেও যেভাবে তারা একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী সানা খানকে নিজেদের হেফাজতে রাখে ও জোর করে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয়, তাতেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যেভাবে এফআইআর দায়ের করা উচিত এ ক্ষেত্রে তা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিবেকের সহকর্মী সানার বক্তব্য ও এফআইআরের বয়ান ভিন্ন, ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

পাশাপাশি বিবেকের ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও উত্তর প্রদেশ পুলিশের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ও মিথ্যে বয়ান প্রমাণিত হয়েছে। পুলিশ বারবার বলছিল, কনস্টেবল প্রশান্ত চৌধুরী নিজেকে বাঁচাতে গুলি চালান, প্রশান্ত নিজে বলেন, বিবেকের গাড়ির ধাক্কায় তিনি নীচে পড়ে যান, ভয় পেয়েছিলেন, বিবেক তাঁর ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিতে পারেন তাই নিজেকে বাঁচাতে সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালান তিনি। কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলছে, গুলি চলে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে, ওপর থেকে নীচে। অর্থাৎ অভিযুক্ত কনস্টেবল বিবেকের সামনে কোনও উঁচু জায়গা থেকে তাঁর ওপর গুলি চালান। প্রশান্তের কোনও চোটও লাগেনি, গাড়ির ধাক্কায় নীচেও পড়ে যাননি তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, মৃতের পরিবারের পাশে রয়েছে তাঁর সরকার, তাদের সবরকম সাহায্য করা হবে। ইতিমধ্যেই গঠিত হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে তারা।