নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এমপি প্রতিনিধিদলকে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ খারিজ কেন্দ্রের। এই সফরে কাশ্মীর সমস্যার আন্তর্জাতিকীকরণ হয়নি বলে দাবি করল দেশের বিদেশমন্ত্রক। বিরোধীদের অভিযোগ, দেশের বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের কাশ্মীর উপত্যকায় যাওয়ার অনুমতি না দিয়ে বিদেশি প্রতিনিধিদলকে সেখানে সফর করতে দেওয়ার ফলে কাশ্মীর ইস্যু আন্তর্জাতিক মাত্রা পেল।
২৩ জন ইইউ এমপি-র দলটি মঙ্গলবার দুদিনের উপত্যকা সফরে যায় গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর সেখানকার বাসিন্দাদের প্রাথমিক মতামত সরজমিনে খতিয়ে দেখার জন্য।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার আজ সাংবাদিকদের সামনে এ ব্যাপারে প্রথম মুখ খুলে জানান, এটা মোটেই কাশ্মীর ইস্যুর আন্তর্জাতিকীকরণ নয় এবং এ ধরনের প্রতিনিধিদলকে সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমেই আসতে হবে, এমনটা নয়। এ ধরনের আদানপ্রদান, বিনিময়ের মাধ্যমে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থ পূরণ হল কিনা, সেটাই আসলে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আমাদের মনে হয়, এধরনের বিনিময় মানুষে, মানুষে যোগাযোগ প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। ইইউয়ের এমপিদের বক্তব্যে কাশ্মীরের বিদ্যমান পরিস্থিতি, সেখানে সন্ত্রাসবাদের বিপদ সম্পর্কে তাঁদের উপলব্ধি প্রতিফলিত হয়েছে বলেও জানান রবীশ কুমার। বলেন, ওঁদের সফরের ফলে কাশ্মীরে ভারত তার জমি ছাড়েনি।
বিরোধীরা ইউরোপীয় সাংসদদের কাশ্মীর সফরকে তৃতীয় পক্ষের নাক গলানো বলে অভিযোগ করেছে। পাল্টা রবীশ কুমার বলেছেন, ইউরোপীয় এমপিদের সফর নিয়ে সরকারের গোচরে আনা হয় যে, দলটি ভারত যাচ্ছে। সফরকারী ইউরোপীয়রা ভারত সম্পর্কে জানতে প্রবল কৌতূহল প্রকাশ করেছিলেন, এই সফর পরিচয় হওয়ার মতো ব্যাপার ছিল।
প্রসঙ্গত, সফরের আয়োজন করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর নন অ্যালাইনড স্টাডিজ নামে দিল্লির একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক। এতে বিদেশমন্ত্রক সরাসরি সামিল ছিল না। রবীশ কুমার বলেন, ওঁরা (ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপিরা) ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেইমতো অতীতে অনেক ক্ষেত্রে যেমনটা করা হয়েছে, সেভাবেই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
বুধবার দলটি সফর শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে ৩৭০ ধারা বাতিলকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় আখ্যা দিয়ে জানায়, তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের পাশে আছে। দলের এক সদস্য বলেন, ৩৭০ ধারার ব্যাপারে বলব, এটা ভারতের ঘরোয়া বিষয়। আমাদের উদ্বেগ সন্ত্রাসবাদ নিয়ে যা গোটা বিশ্বের ত্রাস এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের পাশে দাঁড়ানো উচিত আমাদের। সন্ত্রাসবাদীদের হাতে ৫ নিরপরাধ শ্রমিকের দুর্ভাগ্যজনক হত্যা ঘটেছে। আমরা এর নিন্দা করছি।