কলকাতা: রাজ্যে ভোট-পরবর্তী অবিরাম রাজনৈতিক সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার প্রথম সারির রাজনৈতিক দলগুলির বৈঠক ডাকলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। রাজভবন সূত্রের খবর, আগামীকাল বিকেল চারটেয় সর্বদল বৈঠকে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম নেতৃত্বকে তিনি বৈঠকে ডেকেছেন বলে খবর। পিটিআইয়ের খবর, রাজ্যপালের শান্তি ফেরানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সমালোচনা করেছেন রাজ্য সরকারের। বলেছেন, সরকারেরই এমন উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। দিলীপবাবু বলেন, এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। ত্রিপাঠীর চিঠি পেয়েছি আমরা। কালকের বৈঠকে আমরা যোগ দিচ্ছি। শাসক দল তৃণমূলও বৈঠকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের দূর্গে থাবা বসিয়ে বিজেপি ১৮টি আসন জিতে নেওয়ার পর বদলে যাওয়া রাজনৈতির সমীকরণের প্রেক্ষাপটে হিংসায় অশান্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের নানা জায়গা। শাসক, বিরোধীদের সংঘর্ষ, হানাহানি প্রাণ কেড়েছে বেশ কয়েকজনের। এজন্য পরস্পরের দিকে আঙুল তুলছে বিবদমান শিবির। গত সোমবার রাজ্যপাল জানান, রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দিল্লি গিয়ে অবহিত করেছেন। যদিও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির ভাবনা নিয়ে ওই দুজনের সঙ্গে তাঁর কোনও আলোচনা হয়নি বলেও জানান ত্রিপাঠী।
গত রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্য সরকারকে পাঠানো অ্যাডভাইসরিতে লাগাতার অশান্তির ব্যাপারে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বলে, লোকসভা নির্বাচন কেটে যাওয়ার পর হিংসা অব্যাহত থাকা আইনের শাসন বজায় রাখা ও জনগণের মনে আস্থা গড়ে তোলায় রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতাই তুলে ধরছে। পাল্টা পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলে, রাজ্যে কিছু বিক্ষিপ্ত নির্বাচন-পরবর্তী সংঘর্ষ হলেও সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে।
কেন্দ্রকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় কুমার দে সবকটি হিংসার ঘটনার পরই বিলম্ব না করেই ‘কঠোর ও যথাযথ পদক্ষেপ’ করা হয়েছে বলেও জানিয়ে দেন।
এদিকে, সন্দেশখালির সাম্প্রতিক হিংসায় নিহতদের পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার রাজ্যে আসছে জাতীয় তফসিলি জাতি ও উপজাতি কমিশনের প্রতিনিধিদল।