কলকাতা: রুখতে হবে অশান্তি। রক্ষা করতে হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। নিশ্চিত করতে হবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা। উৎসবের আবহে বাংলাদেশে অশান্তির প্রতিবাদে এই দাবি জানালেন এপার বাংলার বিশিষ্টরা। বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ কমাতে আর্জি তাঁদের। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।


এপার বাংলায় যখন উৎসবের আনন্দ। তখন ওপার বাংলায় অশান্তি আর বিষাদ। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা, রংপুর থেকে ফেনি - নানা জায়গায় অশান্তি, কোথাও বাড়ি-ঘর-দোকানে ভাঙচুর। পদ্মার ওপারে এই পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছেন এপার বাংলার বিদ্বজ্জনেরা। দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার লিখিত আর্জি জানিয়েছেন এই বাংলার লেখক, শিল্পী, সহ বিদ্বজ্জনেরা। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বাংলাদেশের জনসাধারণ ও সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন “দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, জাতির জনকের উদার বিশ্বাস আর বর্তমান সরকারের নীতির বিরোধী, বিদ্বেষমূলক ও প্ররোচনামূলক এই শক্তিগুলিকে সত্বর চিহ্নিত করুন এবং তাদের নিষ্ক্রিয় করুন। ’’ শুধু তাই নয় এই কাজের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁদের শাস্তিও দাবি করা হয়েছে। এই আবদনে সই করেছেন পবিত্র সরকার, মহঃ সেলিম, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার, কৌশিক সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা চন্দন সেন, ঋত্বিক চক্রবর্তী, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, ঋদ্ধি সেন সহ অনেকেই।



নাট্যব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদারের কথায়, “মৌলবাদী শক্তি, যে ধর্মেরই হোক না কেন, এভাবে অস্থিরতা তৈরি করা, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছি, মানবিক ধর্মের কথা সবসময় বলে এসেছি, আমাদের ভাষা এক, কথা কবিতায়, হোক প্রলয় ঝঞ্ঝা, হোক তবু দৃপটপায় জানিয়ে যেতে চাই  ওপারে যদি শত্রুতা দেয়  হানা সময় হানে কখনো সংঘাত ধোয়া ধুলোর হারিয়ে যেতে যেতে এপার থেকে বাড়িয়ে দেবে হাত।’’


শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলছেন, “উপমহাদেশে অশান্তি বন্ধ হোক এটাই আমরা চাই, আমাদের দেশেও ধর্মের নামে নানা অত্যাচার হয়, কোথায় কী মাংস রাখা আছে, তা নিয়ে খুন করা হয়, ধর্মের বাইরে মানুষ মানুষ হিসেবে চিনুক।”


উৎসবের আবহে বিভিন্ন জেলায় অশান্তির  প্রতিবাদ ও নিন্দায় সরব হয়েছেন ওপার বাংলার বিশিষ্টরাও। নিজের ফেসবুক পোস্টে রংপুরের একটি ছবি-সহ অভিনেত্রী জয়া এহসান, নবারুণ ভট্টাচার্যকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন, “এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না। এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না। এই বিস্তীর্ণ শ্মশান আমার দেশ না। এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না। ’’ শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার আবেদন জানিয়ে ট্যুইট করেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী ও পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী রাফিয়েত রশিদ মিথিলাও।