নয়াদিল্লি: ২৭ সেপ্টেম্বর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দপ্তরে হাজিরা দেবেন বলে জানালেন শরদ পওয়ার। মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোট আসন্ন। তার আগেই গতকাল তাঁর বিরুদ্ধে ইডি বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলা দায়ের করেছে। পরদিনই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন পওয়ার। আজ ২১ অক্টোবরের রাজ্য বিধানসভা ভোটের কিছুদিন আগে ইডি-র এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) সভাপতি। ওই মামলার ব্যাপারেই তদন্ত সংস্থার সামনে হাজির হবেন তিনি।
আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে পওয়ার জানান, মহারাষ্ট্র রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারির ব্যাপারে তাঁর কাছে ‘যে তথ্যই’ চাওয়া হোক, সেসব পেশ করতে ওইদিন বেলা দুটোয় তিনি ইডি অফিসে যাবেন। পওয়ার বলেন, বিধানসভা ভোটের প্রচারে বেশিরভাগ সময় মুম্বইয়ের বাইরেই থাকব। এজেন্সির কর্তারা যেন ভুল করে ধরে না নেন যে, আমি অধরা। আমি ওঁদের কাছে যাব, যে তথ্যই ওঁরা চাইবেন, তুলে দেব।
এ প্রসঙ্গে তিনি দেশের সংবিধানে বিশ্বাসী বলে জানান পওয়ার। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করে বলেন, মহারাষ্ট্র ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের আদর্শ মেনে চলে। দিল্লির তখত (শাসক)-এর কাছে মাথা নত করতে জানি না।
ওই ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারির ব্যাপারে পওয়ার, তাঁর ভাইপো অজিত পওয়ার ও অন্যদের বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলা রুজু করেছে ইডি। মুম্বই পুলিশের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতেই মামলা রয়েছে। এফআইআরে নাম রয়েছে ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অজিত পওয়ার, সমবায় ব্যাঙ্কের ৭০ জন প্রাক্তন কর্মকর্তার। সমবায় ব্যাঙ্কে ২৫০০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
ইডির নোটিসকে ধাক্কা বলে মানতে নারাজ তিনি। পওয়ার বলেন, জেলে যেতে হলেও তাঁর অসুবিধা নেই। তিনি তদন্তের মুখে দাঁড়াতে সংস্থার মুম্বই অফিসে যাবেন, নিজে থেকেই এ ব্যাপারে নিজের বক্তব্য জানাবেন।
ঠিক বিধানসভা ভোটের আগেই তাঁকে সমন পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন তুলে পওয়ার বলেন, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যে সময়টা বেছে নেওয়া হল, সেটা বোঝার মতো যথেষ্ট বুদ্ধি মানুষের আছে। এর পিছনে প্রতিশোধস্পৃহার রাজনীতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলা রোধ আইনে ইডি একটি এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফর্মেশন রিপোর্ট পেশ করেছে, যা পুলিশের এফআইআরের সমান।
মামলার মূল বিষয়টি হল, মহারাষ্ট্র রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক সমবায়ের ভিত্তিতে চলা চিনি কল, তাঁত মিল ও অন্যান্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটকে লোন দিয়েছে, এ ব্যাপারে জালিয়াতি করে লোন দেওয়া হয়েছে শীর্ষ অফিসার, পদাধিকারীদের।
২০০১ থেকে ২০১১-র মধ্যে যে সময়ে এই জালিয়াতি, অনিয়ম হয়েছে, তখন মহারাষ্ট্র সমবায় ব্যাঙ্কের মাথায় থাকা ৪৮ জন ডিরেক্টরের বেশিরভাগই ছিলেন নানা রাজনৈতিক দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। মঙ্গলবার পওয়ার দাবি করেন, তিনি কোনও ব্যাঙ্কেরই ডিরেক্টর পদে ছিলেন না। অজিত পওয়ার ও অন্যরা এ মাসে আগেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গৃহীত প্রক্রিয়া খারিজ করা হোক। তবে সেই আবেদন খারিজ হয়। মুম্বই পুলিশকে অবাধ, নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট।