নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকাশ্যে পিস্তল দেখিয়ে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্য়ালয়ের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বিক্ষোভে সামিল পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে ধরা পড়ল একজন। তার ছোড়া গুলিতে জখম এক পড়ুয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বন্দুকধারী লোকটি চিত্কার করে বলে, ইয়ো লো আজাদি! তাকে ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’, ‘দিল্লি পুলিশ জিন্দাবাদ’ও বলতে শোনা যায়। ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
আক্রমণকারীর পরিচয় প্রথম দিকে জানা যায়নি। তবে পরে জানা যায়, তার নাম রাম গোপাল, সে গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা। বিক্ষোভকারীরাই তাকে কাবু করে ধরে ফেলেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিন সিএএ বিরোধী মিছিল করার কথা ছিল জামিয়ার পড়ুয়াদের। জামিয়া থেকে রাজঘাটে মহাত্মা গাঁধীর সমাধিস্থল পর্যন্ত মিছিল যাবে বলে ঠিক ছিল। মিছিল শুরুর আগে আচমকা আবির্ভাব হল বন্দুকধারীর। আম্মা আসিফ নামে জামিয়ার অর্থনীতি বিভাগের এক ছাত্র সংবাদসংস্থাকে বলেন,আমরা হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলাম। সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। আচমকা একজন বন্দুক হাতে হাজির হয়। সে গুলি চালায়। একটি বুলেট আমার বন্ধুর হাতে লাগে। ঘটনাস্থলে প্রচুরসংখ্যক পুলিশ ছিল। জখম ২৫ বছর বয়সি পড়ুয়ার নাম শাদাব নাজার। তিনি জামিয়ার মাস কমিউনিকেশন বিভাগের পডু়য়া। জম্মু ও কাশ্মীরের ছেলে।
গতকাল দিল্লির শাহিনবাগের সিএএ-বিরোধী ধরনাস্থলেও আচমকা বন্দুক হাতে ধরা পড়েন এক ব্যক্তি, যিনি সংবাদ সংস্থাকে জানান, তিনি অবস্থানের বিরোধী নন, কিন্তু একটানা রাস্তা বন্ধ থাকার ফলে স্থানীয় মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। তাঁর বন্দুকের লাইসেন্স আছে বলেও জানান তিনি। তার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গুলি চলল জামিয়ায়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বিজেপি প্রার্থীর জনসভায় ‘দেশ কে গদ্দারো কো’ বলছেন, আর তার জবাবে উপস্থিত লোকজনকে ‘গোলি মারো শালো কো’ বলতে শোনা যাচ্ছে, এহেন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসার দিনকয়েকের মধ্য়েই আজকের ঘটনা।
সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার দাবি, বিজেপি নেতারা দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে যেসব উস্কানিমূলক, উত্তেজনা ছড়ানো কথাবার্তা বলছেন, এটা তারই প্রত্যক্ষ ফল। মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে এমনটা হল, এটাই দুঃখের। ‘বিশ্বাসঘাতকদের গুলি করে মারতে’ বলে জনতাকে উসকানি দেওয়া মন্তব্যের জন্য অনুরাগ ঠাকুরকে গ্রেফতারির দাবি করেন তিনি।