নয়া দিল্লি : সামনের বছরই লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election)। বিজেপি কি তৃতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসবে ? নাকি এবার পালা বদলের পালা ? সে নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা জারি রয়েছে। কিন্তু, লোকসভা ভোটের আগে কোথায় দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ? নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মুখ কে হবেন ? তা অবশ্য এখনও ঠিক হয়নি। রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতিশ কুমারের মতো নাম মাঝেমধ্যে ভেসে উঠলেও আদৌ কি তা সম্ভব ? বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এক্ষেত্রে এককাট্টা হতে পারবে বিজেপির বিরুদ্ধে ? এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি। তাছাড়া বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে আলাদা আলাদাভাবে প্রার্থী দিতে দেখা গিয়েছে কমবেশি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলকেই। এই পরিস্থিতিতে এককাট্টা হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দীহান রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু, কী ভাবছে এইসব দলের নেতৃত্ব ? এনিয়ে নিজের চিন্তাভাবনা খোলসা করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
এবিপি নিউজের প্রতিনিধি মনোজ্ঞা লোইওয়াল-র সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ২০২৪-এ বিজেপির কাছে সবথেকে বড় চেহারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সবথেকে বড় মুখ কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ?
অভিষেক-উবাচ-
উত্তরে অভিষেক বললেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ছেন, এমন একটা পার্টি দেখান যারা লড়ছে? এত কিছুর পরেও উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) থামছেন না। দল পুরো শক্তি দিয়ে প্রতিটি ভোট লড়ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে। ইডি-সিবিআই দেখিয়ে সব জায়গায় যত রাজনৈতিক দল আছে সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। আমি মনে করি, তৃণমূলই একমাত্র দল যারা সমস্ত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বিজেপির শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে লড়ছেন, ২০২১-এও দেখেছেন ওঁর পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তার পরেও উনি যে মানসিকতা নিয়ে লড়েছেন, আমি মনে করি, সেটা একটা বিশাল বড় উদাহরণ আগামী প্রজন্মের কাছে।"
শুধু তা-ই নয়, ভাগ-বাঁটোয়ারা ইস্যুতে বিজেপিকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে বুঝিয়ে দিলেন ইস্যুভিত্তিক রাজনীতিই তাদের পথ। অভিষেক বললেন, "যেখানে যান ভেঙে দেওয়া, হটিয়ে দেওয়ার কথা একমাত্র বিজেপি বলে। বাংলায় বাঁটোয়ারার কথা কে বলছে ? বিজেপি না তৃণমূল ? সোজা উত্তর, বিজেপি করছে। মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। আমরা তো ইস্যুভিত্তিক কথা বলি। রাজনীতি পরিকাঠামো নিয়ে হওয়া উচিত। শিক্ষা, পর্যটন, আইন-শৃঙ্খলা, আপনি কী করতে পারবেন-এসব নিয়ে হওয়া উচিত। ধর্ম নিয়ে হওয়া উচিত নয়।"
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি-বিরোধী ভোট কাটার রাজনীতির অভিযোগ অতীতে উঠেছে। যা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষিপ্ত ঘাসফুল শিবির। বিভিন্ন সময় অন্য দলের তোলা এহেন অভিযোগের কড়া জবাবও দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে তৃণমূল বা অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এত কম সময়ের মধ্যে কোন 'জাদুকাঠির ছোঁয়া'য় একমঞ্চে আসবে ? আদৌ কি তা সম্ভব ! এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, রাজনীতির কারণে সমস্ত দূরত্ব ঘুচিয়ে একমঞ্চে আসার উদাহরণ আগেও দেখা গেছে। এমনই বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন ; সবথেকে বড় ভয়, অধরা স্বপ্ন থেকে প্রিয় রাজনীতিক; র্যাপিড ফায়ারে অকপট অভিষেক