নয়াদিল্লি: দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছিলেন হাজার হাজার মানুষকে। গায়ের রং দেখে মানুষ বিচারের তীব্র বিরোধী ছিলেন তিনি। সেই কারণে আমেরিকার নাগরিকদের মনে আজও বিশেষ জায়গা রয়েছে অ্যাব্রাহাম লিঙ্কনের জন্য, যিনি দেশের দেশের ১৬তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমেরিকায় সেই লিঙ্কনের স্মৃতি ধরে রাখতেই হিমশিম অবস্থা সকলের। রাজনৈতিক বা সামাজিক সংঘাত নয়, তীব্র দাবদাহকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। (Abraham Lincoln Statue Melts)
পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই এবছর রেকর্ড গড়েছে তাপমাত্রা। সপ্তাহান্তে আমেরিকার তাপমাত্রাও ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। আর তাতেই আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে বসানো লিঙ্কনের মূর্তি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল মাথা। মূর্তিটি ছিল মোমের তৈরি। তীব্র গরমে মোম গলতে শুরু করলে, মূর্তির মাথার অংশ শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। পা দু’টিও গলে গিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। লিঙ্কনের মূর্তির ওই অবস্থা হওয়ায় স্তম্ভিত সকলেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিকৃত ওই মূর্তির ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। (Viral News)
ওয়াশিংটনের ক্যাম্প বার্কার এলাকায় লিঙ্কনের মোমের ওই মূর্তি বসানো ছিল। আমেরিকা যখন গৃহযুদ্ধের সঙ্গে যুঝছিল, সেই সময় দাসত্ব থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আফ্রিকান-আমেরিকানদের জন্য আশ্রয় গড়ে তোলা হয় ওই এলাকায়। দাসত্ব ঘোচানোয় লিঙ্কনের ভূমিকা স্মরণ করেই সেখানে ওই মূর্তিটি বসানো হয়েছিল। কিন্তু তীব্র গরমে মূর্তিটি গলে গিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, মূর্তিটির মাথার অংশ প্রথমে আলাদা হয়ে যায়। এর পর দুই পা-ও গলে গিয়ে মূর্তি থেকে আলাদা হয়ে যায়। সেটিকে পুনরায় গড়ে তোলার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
আমেরিকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা Cultural DC ওই মূর্তিটি দেখভালের দায়িত্ব ছিল। তীব্র গরমে মূর্তিটি গলে যাওয়ায়, তারাই সেটিকে পুনরায় গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে। এবছর সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মূর্তিটি ঠিক করে আবার বসানো হবে বলে জানিয়েছে তারা। মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন স্য়ান্ডি উইলিয়ামস। মোম দিয়ে মূর্তিটি বানানোর সিদ্ধান্ত আদৌ সঠিক ছিল কি না, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
স্যান্ডি জানিয়েছেন, ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও যাতে মূর্তিটি ঠিক থাকে, সেই মতোই কাজ করা হয়েছিল। তাপমাত্রার পারদ ৪০-এর কাছাকাছি যেতেই মূর্তিটির এই অবস্থা হওয়া নিয়ে স্তম্ভিত তিনিও। এর জন্য আর্দ্রতাকেও দায়ী করা হচ্ছে। লিঙ্কনের গলে যাওয়া ওই মূর্তিকে সামনে রেখে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতাও তুলে ধরতে শুরু করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা।