ইসলামাবাদ: গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে রবিবারই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের লাহৌরের বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন ইসলামাবাদ পুলিশের একটি দল। এবার জারি নিষেধাজ্ঞা। কোনও টেলিভিশন চ্যানেলে ইমরানের কোনও বার্তা বা অন্য কিছু সম্প্রচার করা যাবে না। সব মিলিয়ে ফুটছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।


জারি নিষেধাজ্ঞা...
রবিবারের ঘটনার পর থেকেই টালমাটাল পাকিস্তান। লাহৌরের বাসভবনে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর খোঁজ না পাওয়া গেলেও তাৎপর্যপূর্ণভাবে এর পরেই সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিতে শোনা যায় ইমরানকে। ৭০ বছরের 'কাপ্তান' বলেন, 'উপরওয়ালা ছাড়া আর কারও কাছে মাথা নত করব না। আসল স্বাধীনতার জন্য এটিই লড়াই।' বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকেও গত কাল কড়া আক্রমণ করেন ইমরান। এর পরই নিষেধাজ্ঞা জারি 'পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটি' -র। টেলিভিশন চ্যানেলগুলিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ইমরানের কোনও বক্তৃতা সম্প্রচার করা যাবে না। যুক্তি, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধানের মন্তব্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। সামাজিক শান্তি ও স্থিতাবস্থাও ক্ষুণ্ণ হতে পারে এতে। পাক ' ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটি'-র সাফ হুঁশিয়ারি, এই নিষেধাজ্ঞার পরও ইমরানের কোনও বক্তৃতার লাইভ বা রেকর্ডেড অংশ সম্প্রচার করলে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। 


পরিস্থিতি কী?
এই মুহূর্তে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ। তার মধ্য়েই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে এই ডামাডোল নতুন জট তৈরি করেছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই যাতে দেশে নির্বাচন হয় সে জন্য ইতিমধ্যেই কাতারে কাতারে মিছিল করেছেন ইমরান। সমর্থকদের উদ্দেশেও তাঁর স্পষ্ট বার্তা, তাড়াতাড়ি নির্বাচনের দাবিতে প্রয়োজন হলে গ্রেফতার হতেও দ্বিধা করা যাবে না। এদিকে শেহবাজ শরিফের পক্ষেও সময়টা কঠিন। যদি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের দাবির কাছে নতিস্বীকার করে সময়ের আগেই নির্বাচন করতে হয়, তা হলে তাঁর সরকারের কড়া ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে। তাই তিনিও প্রাণপণ চাইছেন, কোর্টের নির্দেশ যেনতেনপ্রকারেণ বলবৎ করতে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৭ মার্চ অর্থাৎ আগামীকালের মধ্যে ইমরান খানকে কোর্টে পেশ করতে হবে। সেই নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা রয়েছে। 


গত কাল কী হয়েছিল?
দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছএন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট দলের 'কাপ্তান' । সেই নিয়ে একাধিক মামলাও চলছে। সেই সূত্রেই ইসলামাবাদ থেকে অফিসাররা লাহৌরে ইমরানের বাসভবনে এসেছিলেন বলে খবর। বাইরে তখন কাতারে কাতারে ইমরান-সমর্থকের ভিড়। পরে ইসলামাবাদ পুলিশ ট্যুইট করে জানায়, 'কোর্টের নির্দেশ মেনে ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে  ইসলামাবাদ পুলিশ লাহৌরে পৌঁছয়। উনি আত্মসমর্পণ করার ব্যাপারে মোটেও উৎসাহী ছিলেন না। তাই পুলিশ সুপার ইমরানের ঘরে ঢোকেন। কিন্তু উনি সেখানে ছিলেন না।' গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির একটি মামলায় হাজিরা দেননি। তার পরই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।  


আরও পড়ুন:ফের ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে মানিক সাহা, ৮ মার্চ শপথগ্রহণ