নয়াদিল্লি: আর্থিক তছরুপ মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন হেমন্ত সোরেন। গ্রেফতার হওয়ার আগে যদিও ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তবে হেমন্তই প্রথম নন, এই নিয়ে ঝাড়খণ্ডের তিন মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হলেন। হেমন্তের আগে গ্রেফতার হন তাঁর বাবা শিবু সোরেনও। গ্রেফতার হন ঝড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোডাও। (Hemant Soren Arrested)
২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন হেমন্ত। বুধবার একটানা ছয় ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সব মিলিয়ে ন'বার ED-র সমন এড়িয়ে গিয়েছিলেন হেমন্ত। বুধবার শেষ মেষ কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দেন। গ্রেফতার হওয়ার আগে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে জমা দেন পদত্যাগপত্র। (Jharkhand CMs Arrest History)
পদত্যাগ করার পর যদিও গ্রেফতার হন হেমন্ত। তবে সময়ের ব্যবধান ছিল মাত্র কয়েক মুহূর্ত। ২০০০ সালের ১৫ নভেম্বর পৃথক ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠিত হয়। তার পর থেকে ছয় মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছে রাজ্যটি। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে তিন বার। এর মধ্যে শুধুমাত্র বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী রঘুবীর যাদবই ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কার্যকাল পূরণ করতে সফল হন।
আরও পড়ুন: Interim Budget 2024: প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে, কিন্তু অন্তর্বর্তী বাজেটে যা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি
মেয়াদ পূর্ণ করার আগে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তদানীন্তন UPA জোটের শরিক হিসেবে রাজ্যে ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ এবং আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি থাকার অভিযোগ ছিল। খনি দুর্নীতিতে তাঁর নাম জড়ায়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI এবং ED জানিয়েছিল, খনির বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে মোটা টাকা ঘুষ নিতেন তিনি।
সেই সময় অভিযোগ ওঠে, মধু এবং তাঁর সহযোগীরা মিলে খনি দুর্নীতি থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা পকেটে পুরেছেন। মধুর নিজের নামে থাকা ১৪৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়। ২০০৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর ২০১৩ সালে জামিনে বেরিয়ে আসেন মধু। এর পর, ২০১৭ সালে দোষী সাব্যস্ত হন। তিন বছরের সাজার পাশাপাশি ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় তাঁকে। হাওয়ালা মাধ্যমে লেনদেন, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির আরও চারটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন মধু।
হেমন্তের বাবা শিবুকে ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর যাবজ্জীবনের সাজা শোনায় দিল্লির আদালত। ১৯৯৪ সালের একটি অপহরণ এবং খুনের মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। নিজের ব্যক্তিগত সচিব শশীনাথ ঝায়ের খুনে তিনি যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করা হয়। মনমোহন সিংহ সরকারের কয়লা মন্ত্রীও ছিলেন শিবু। ২০০৭ সালের অগাস্ট মাসে দিল্লি হাইকোর্ট শিবুকে বেকসুর খালাস করে। উপজাতি নেতা শিবুর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ আদালতে তুলে ধরতে পারেনি বলে তিরস্কৃত হয় CBI. ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে। খুনের মামলায় মুক্তি পান শিবু।